পাবনায় মাছ চাষে নদীতে আ.লীগ নেতাদের বাঁধ

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা গ্রামের চিকনাই নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মাছ চাষের জন্য দেওয়া এই বাঁধের কারণে নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদীতে ভরপুর পানি থাকে। বর্ষার পর থেকে নাব্য কমে যায়। এ সময় স্থানীয় জেলেরা মাছ শিকার করেন। পাশাপাশি নদীর পারে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়। নদী থেকে এসব বীজতলায় পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
এ বছর মূলগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল বিশ্বাস ও ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ স্থানীয় ব্যক্তিদের নদীতে মাছ ধরতে দেননি। নদীর প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নিজেদের দখলে রাখতে দুটি আড়াআড়ি বাঁধ দিয়েছেন। এতে পুরো নদী একটি পুকুরে পরিণত হয়েছে। নদীর বাঁধ দেওয়া ওই অংশে তাঁরা মাছ চাষ করবেন বলে স্থানীয় ব্যক্তিদের জানিয়েছেন।
স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতা গ্রামের আরও প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন। তাঁদের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা বাঁধ দেওয়া অংশ দেখাশোনা করছেন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। পারের উঁচু অংশে করা হয়েছে বোরো ধানের বীজতলা। নদীর মাঝে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা দখলে রাখতে দুই পাশে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। সাত থেকে আটজন শ্রমিক বাঁধটি আরও উঁচু করার কাজ করছেন।
মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে অনেক কিছুই হচ্ছে। কিন্তু আমি জানি না। জানলেও এ মুহূর্তে আমার কিছু করার নেই। তবে নদীতে এভাবে আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া অন্যায়।’
আওয়ামী লীগের নেতা কাজল বিশ্বাস বলেন, ‘মাছ চাষের জন্য আমরা অনুমোদন নিয়েই বাঁধ দিয়েছি। ওই নদীতে সারা বছর পানি থাকে না। বাঁধ দেওয়ার কারণে এলাকাবাসী সারা বছর পানি ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম জানান, কোনো অনুমোদন ছাড়াই কাজটি হচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।