দুই অন্তঃসত্ত্বার আত্মহত্যা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে গত সোমবার লাভলী বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূ ও তাঁর ছেলে পিন্টুর (৬) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই দিন সদর উপজেলায় বাবার বাড়ি থেকে রিনা আক্তার (১৮) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দাম্পত্যে কলহের কারণে অন্তঃসত্ত্বা ওই দুই নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও পুলিশ জানিয়েছে।

লাভলীর পরিবারের বরাত দিয়ে হরিরামপুর থানার পুলিশ জানায়, প্রায় আট বছর আগে হরিরামপুরের খোদানওধা গ্রামের বজলু মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার কৌড়ি গ্রামের আবদুল বারেকের মেয়ে লাভলীর বিয়ে হয়। অভাবের সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সোমবার সকালে ঘরে লাভলী ও তাঁর ছেলের লাশ দেখে প্রতিবেশীরা থানায় খবর দেন। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। গ্রেপ্তার করে বজলু মিয়াকে। হরিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রোববার রাত আটটার দিকে বজলু তাঁর আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী লাভলীকে মারধর করেন। এর জের ধরে ক্ষোভে-দুঃখে ওই দিন রাতের কোনো একসময় লাভলী তাঁর মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে পিন্টুকে কীটনাশক পান করিয়ে হত্যা করেন। এরপর তিনি কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় লাভলীর ভাই জাকির হোসেন আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বজলুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে রিনার বাবা নিজামুদ্দিন জানান, পরিবারের অজান্তে রিনা দুই বছর আগে সাটুরিয়া উপজেলার মহিষালোহা গ্রামের আনোয়ার হোসেনকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের এক বছর না যেতেই তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। গত শুক্রবার আনোয়ার ভাটবাউর গ্রামে তাঁদের (নিজামুদ্দিন) বাড়িতে আসেন। শনিবার দুপুরে আনোয়ার ও রিনার মধ্যে ঝগড়া হয়। রোববার রিনাকে রেখে বাড়ি চলে যান আনোয়ার। সোমবার সকালে মুঠোফোনে আনোয়ার ও রিনার মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে সকালেই এক ফাঁকে ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা রিনা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ মুন্সী বলেন, বিকেলে পুলিশ রিনার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। রিনার পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আপাতত থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।