কুমিল্লায় পেট্রলবোমায় আটজন হত্যা মামলায় খালেদার জামিন নামঞ্জুর

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে আটজনকে হত্যার মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদনও নামঞ্জুর হয়েছে। জামিনের আবেদনের পূর্ণাঙ্গ শুনানি ২৩ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম এ আদেশ দেন।

কুমিল্লায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য মো. কাইমুল হক প্রথম আলোকে জামিন বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খালেদা জিয়া ঢাকায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১০ এপ্রিল দুপুরে কুমিল্লার ৫ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মুস্তাইন বিল্লাহ খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর তাঁর আইনজীবীরা জামিন নামঞ্জুর আদেশের সার্টিফায়েড কপি সংগ্রহ করেন। আজ সকালে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবীরা। বেলা ১১টায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি হয়। এতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পরে জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম সেটি নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন ধার্য করেন ২৩ এপ্রিল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন গ্রহণ করে হাজির করার পরোয়ানা (প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট-পিডব্লিউ) জারি করেন কুমিল্লার আদালত। একই সঙ্গে ২৮ মার্চ মামলার শুনানির দিন খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই দিনই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে কুমিল্লার আদালতে আবেদন করেন। এরপর গত ১৪ মার্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন ও আদালতে হাজিরা পরোয়ানা জারির নির্দেশ বাতিল চেয়ে আবেদন নিয়ে আদালত কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে তাঁর উপস্থিতিতেই ২৮ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ওই দিনই পুনরায় ৮ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করা হয়। ওই দুই দিন খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়নি। তখন আদালত ১০ এপ্রিল জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেন। বিচারিক আদালতের ওই দিনের শুনানিতে সেটি নামঞ্জুর করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চান তাঁর আইনজীবীরা।
জানতে চাইলে কুমিল্লার কোর্ট পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমার আগুনে পুড়ে আটজন যাত্রী নিহত হন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালত আগেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ১২ মার্চ গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর কুমিল্লার আদালতে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন বিকেলে আদালতের বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেন। একই সঙ্গে ২৮ মার্চ তাঁকে কুমিল্লার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের পর গত ৮ এপ্রিল কাস্টডি ওয়ারেন্ট (হাজতি পরোয়ানা) জারি করেন।
২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৭৭ জন আসামির মধ্যে ৪৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আছে। জামিনে আছেন ২৯ জন এবং জেলহাজতে রয়েছেন একজন।