ছাগলটিকে বাঁচাল ওরা চারজন

সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী আহত এই ছাগলটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সখীপুর, টাঙ্গাইল, ১৬ এপ্রিল। ছবি: ইকবাল গফুর
সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী আহত এই ছাগলটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সখীপুর, টাঙ্গাইল, ১৬ এপ্রিল। ছবি: ইকবাল গফুর

বিদ্যালয়ের মাঠের এক পাশে ছাগলটি ভ্যা ভ্যা চিৎকার করছিল। দশম শ্রেণির আনিকা, কলি, লাবণী ও আমিনা সেই চিৎকার শুনে ছাগলের কাছে যায়। ওরা দেখে, ছাগলের মাথা ও ঘাড় থেকে রক্ত ঝরছে। পরে অন্য কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছে জানতে পারে, একটু আগে কয়েকটি কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে ছাগলটি।

পরে চার সহপাঠী একটি কাগজের কার্টনে করে ছাগলটি নিয়ে রিকশাভ্যানে তুলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ওই ছাগলের ক্ষত অংশে তুলা দিয়ে মুছে দেন। ইনজেকশনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা দেন। শেষে ছাগলটি নিয়ে আবার বিদ্যালয়ে ফিরে যায় ওই চার সহপাঠী। ততক্ষণে ছাগলের মালিক জুলেখা বেগম খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে চলে আসেন। ওরা ছাগলটিকে ওই নারীর কাছে তুলে দেয়।

এ ঘটনাটি সোমবার সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ঘটে। সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই চার শিক্ষার্থী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে বেলা ১১টায় প্রথম আলোকে বলেন, ছাগলটির চিৎকার তাদের চরমভাবে মর্মাহত করে। তারা শ্রেণিশিক্ষকের অনুমতি নিয়ে আহত ওই ছাগলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। ছাগলটির চিকিৎসা করাতে পেরে তারা আনন্দিত।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন শেখ মানিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্কুলের নির্ধারিত পোশাকে ছাত্রীদের ছাগলসহ হাসপাতালে দেখে আমি প্রথমে আশ্চর্য হই। এরপর ওদের কথা শুনে ছাগলের যথাযথ চিকিৎসা দিই। প্রাণীর প্রতি ওদের দরদ দেখে আমার ভালো লেগেছে।’

সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাইউম হোসাইন বলেন, ‘ছাগলের মালিক জুলেখা বেগম চিকিৎসা পাওয়া ওই ছাগল পেয়ে খুবই খুশি হন। প্রাণভরে ওদের জন্য দোয়া করেন। আমার বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীরা একটি প্রাণীর বিপদে এগিয়ে এসেছে। আমাদের সবার এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’