কোটা সংস্কারের পক্ষে থাকায় হুমকির মুখে আইনজীবী

কোটা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সদ্য আইন পেশায় যুক্ত এক নারী। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত—এমন আট-দশজন যুবকের বিরুদ্ধে তিনি অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) করেছেন।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক পাস করা ওই নারী এখন জজকোর্টে আইন পেশা চর্চা করেন। গত রোববার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েনর বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার সুবাদে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে নামেন। এতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা খেপে ওঠেন।

ওই নারী বলছিলেন, ১২ এপ্রিল তিনি তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। হঠাৎ আট-দশজন ছাত্র তাঁর সামনে এসে দাঁড়ান। তাঁরা ওই বড় ভাইকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এরপর দুজন গিয়ে ওই নারীর পাশে বসেন। অন্যরা তাঁর কাছ থেকে জানতে চান, তিনি কেন কোটা সংস্কারের পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি প্রাক্তন হয়ে যাওয়ার পরও কেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন, সেটাও জানতে চান তাঁরা। ফেসবুকের লেখা মুছে না ফেললে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

তিনি ওই ভিড়ের মধ্যে কয়েকজনকে চিনতে পারেন। তাঁরা তাঁরই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ক্লাস নিচের ছাত্র। ঘটনাস্থল থেকে একরকম পালিয়ে এসে তিনি ফেসবুকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লেখেন। এরপর ফেসবুকের মেসেঞ্জারে তাঁকে শাসাতে শুরু করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। ১৪ এপ্রিল নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে ওই নারী আইনজীবী একটি জিডি করেন। তবু তাঁদের কেউ কেউ এখনো তাঁকে শাসাচ্ছেন বলে জানান তিনি। তিনি রমনা থানায় নাম উল্লেখ করে তিনজনের বিরুদ্ধে ও নাম না–জানা আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করছেন রমনা থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ জুলফিকার আলী।

গতকাল রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ব্যস্ততার কারণে তিনি ঘটনার তদন্ত শুরু করতে পারেননি। আজ (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবেন এবং কাজ শুরু করবেন।