রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধান চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

মঙ্গলবার বিকেলে লন্ডনের ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশ’স ডেভেলপমেন্ট স্টোরি : পলিসিজ, প্রগ্রেসেজ অ্যান্ড প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
মঙ্গলবার বিকেলে লন্ডনের ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশ’স ডেভেলপমেন্ট স্টোরি : পলিসিজ, প্রগ্রেসেজ অ্যান্ড প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধান চেয়েছেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সাম্প্রতিক সময়ে নির্যাতনের মাধ্যমে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পুরো চাপ বাংলাদেশ একাই সামলাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার বিকেলে লন্ডনের ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (ওডিআই)-এ ‘বাংলাদেশ’স ডেভেলপমেন্ট স্টোরি : পলিসিজ, প্রগ্রেসেজ অ্যান্ড প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এ সংকটের শান্তিপূর্ণ, টেকসই ও আশু সমাধান চায়।’ তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী দমন অভিযান শুরুর পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকদের সংখ্যা এখন ১১ লাখ। বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দিয়েছে।

সরেজমিনে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিজ চোখে দেখার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক বিশ্ব নেতা কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিগত কয়েক বছরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশাল সাফল্য অর্জন করা সত্ত্বেও এই সাফল্যকে টেকসই করতে হলে বাংলাদেশকে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাফল্যের মানে এই নয় যে, আমাদের সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। ...বাংলাদেশের ভেতর ১০ লক্ষাধিক দেশান্তরী মিয়ানমার নাগরিকের অভিবাসনের পাশাপাশি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলায় লড়াই করছি।’

জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু দূষণে খুবই নগণ্য ভূমিকা সত্ত্বেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে মারাত্মক শিকারে পরিণত হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের জন্য অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই গ্রহ, আমাদের জীববৈচিত্র্য এবং আমাদের জলবায়ু সুরক্ষিত করা বিশ্ব সম্প্রদায়ের অভিন্ন দায়িত্ব।’ শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেলটা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। আমাদের পোশাক কারখানাগুলোকে নিরাপদ করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৬৭ টি লীড সনদধারী তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। ৭টি পরিবেশবান্ধব কারখানা ও বস্ত্র কারখানা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রনীতির উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার ব্যবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং কূটনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সকল দেশের সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, রূপান্তরযোগ্য প্রযুক্তির জন্য আমাদের জ্ঞান ও ইনোভেশন অংশীদারত্বের প্রয়োজন। আমরা জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধিশালী ও শান্তিপূর্ণ দেশ করতে ভিশন-২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সক্ষম হবে বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন।