১০৬ বছর বয়সেও জোটেনি বয়স্ক ভাতা!

আছিয়া খাতুন
আছিয়া খাতুন

বয়স: ১০৬ বছর। নাম আছিয়া খাতুন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে তাঁর জন্ম তারিখ ১২ এপ্রিল ১৯১২। বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মাহমুদাবাদ এলাকায়।

তবে আছিয়া খাতুনের নাম এখনো বয়স্ক ভাতার তালিকায় ওঠেনি!

সমাজসেবা অফিসের তথ্য বলছে, বয়স্ক ভাতা পেতে নারীর জন্য বয়স ৬২ ও পুরুষের জন্য ৬৫ বছর হওয়া প্রয়োজন। সে হিসেবে আছিয়া খাতুনের ৪৪ বছর আগে বয়স্কভাতা পাওয়ার কথা। অবশ্য বাংলাদেশে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে প্রথম ‘বয়স্ক ভাতা’ কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। শুরুর দিকে মাসিক ভাতার পরিমাণ ১০০ টাকা হলেও বর্তমানে তা ৫০০ টাকা।

সোমবার মাহমুদাবাদ এলাকায় কথা হয় আছিয়া খাতুন ও তাঁর মেয়ের সঙ্গে। তিনি লাঠি ভর দিয়ে হাঁটছিলেন। কোথায় যাচ্ছেন জানতে চাইলে, প্রথমে তিনি কিছুই বলতে পারেননি। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর মেয়ে বললেন, ‘তিনি কানে কম শুনতে পান।’ জোরে আওয়াজ করে বয়স্ক ভাতা পান কি না জানতে চাইলে আছিয়া খাতুন বলেন, ‘কে আমাকে ভাতা দেবে। এখন তো চলে যাওয়ার (মৃত্যুর) সময় হয়ে গেছে।’

আছিয়া খাতুনের বড় ছেলে মোহাম্মদ হারুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধি তাঁর মাকে বয়স্ক ভাতা দেননি।’

জানতে চাইলে ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক শ বছরের অধিক বয়সের বৃদ্ধা আমার ইউনিয়নে আছে তা ওয়ার্ড মেম্বর কোনো দিন জানায়নি। দ্রুত ওই নারীর বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করব।’

হাটহাজারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন খন্দকার বলেন, ‘ওই বৃদ্ধাকে কেন বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়নি খোঁজ নিচ্ছি।’

আছিয়া খাতুন বয়স্ক ভাতা পাননি শুনে অবাক হন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আক্তার উন নেছা শিউলি। তিনি বলেন, ‘১০৬ বছরের বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা পাননি? দ্রুত আমার কাছে পাঠান। তাঁকে বয়স্ক ভাতার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’