হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কিশোর হত্যার অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক কিশোরকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিল্লাল বিশ্বাস (১৭) নামের ওই কিশোর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

বিল্লাল বিশ্বাস ভ্যানচালক। সে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর গ্রামের নটখোলা গ্রামের সিদ্দিক বিশ্বাসের ছেলে।

জানা গেছে, বিল্লালের চাচাতো ভাই বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাশামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বুধবার বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ক্লাসের সময় বেঞ্চে বসা নিয়ে বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাশামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইউব আলী বলেন, ‘বেঞ্চে বসা নিয়ে দুই ছাত্রের মধ্যে গন্ডগোল হলেও আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা মিটিয়ে দিই।’ 

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনা জেরে বিল্লাল ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে তার ভাইকে যে মেরেছিল, সেই কিশোরকে চড়-থাপ্পড় মারে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কিশোররে ভাই আশিক ফকির (১৮) তার আরও কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে চিতারবাজার-ময়েনদিয়া সড়কের শ্রীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে বিল্লালকে ধরে ওই বিদ্যালয়ের পেছনে একটি মেহগনিবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে বিল্লালের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় এলাকাবাসী বিল্লালকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বুধবার রাতেই বিল্লালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে আজ শুক্রবার সকালে আশিক ফকিরের বাসায় গিয়ে আশিক এবং বাবা ও মাকে পাওয়া যায়নি। গ্রামের লোকজন জানায়, বিল্লালের মৃত্যুর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই এ পরিবারের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের মুঠোফোনগুলোও বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিল্লালের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, আজ বিল্লালের লাশ ঢাকা থেকে বাড়িতে এনে দাফন দেওয়ার পর ওই পরিবারের সদস্যরা হত্যা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের আটকের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।