দশম সংসদে কোরাম সংকটের অর্থমূল্য ১২৫ কোটি টাকা

গত বছর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৩০ মিনিট কোরাম সংকটের কারণে অপচয় হয়েছে। এর প্রতি মিনিটে গড় অর্থমূল্য ৬৩ হাজার ৬৮৬ টাকা। এই হিসাবে গত বছর কোরাম সংকটের সময়ের অর্থমূল্য ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৮ টাকা। চলতি দশম সংসদে কোরাম সংকটের অর্থমূল্য ১২৫ কোটি টাকা।

আজ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দশম জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট ওয়াচ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বেলা ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। চলতি সংসদের ১৪তম থেকে ১৮তম অধিবেশন পর্যন্ত (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত অধিবেশন নিয়ে এই গবেষণা করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন আলোচনা পর্বে সংসদ সদস্যরা অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছেন মোট সময়ের ৫ শতাংশে। সদস্যদের ভেতরের প্রতিপক্ষ দল সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে ১৯৫ বার অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছে। বিশ্বব্যাংক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার হয়েছে ২৩ বার। সরকার ও বিরোধী দলের নেতা ও সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করা হলেও এ ধরনের আলোচনা বন্ধে স্পিকারের কার্যকর ভূমিকার ঘাটতি দেখা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোরাম সংকট সব সময়ই ছিল। এখন সেটি গড়ে ৩০ মিনিট, যা উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের ভূমিকা পালনে ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। বিরোধী দল হিসেবে যাদের উপস্থাপন করা হয়েছে, সংসদের শেষ দিকে এসে তাদের নিজেদের আত্মপরিচয়ের সংকট একাধিকবার তাদের নিজেদের মুখেই শোনা গেছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

কোরাম সংকটের অর্থমূল্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা প্রাক্কলিত আনুমানিক অর্থমূল্য। এটাকে টিআইবি দুর্নীতি বলছে না। একটি ধারণা দেওয়ার জন্য এই অর্থমূল্যের প্রাক্কলন করা হয়েছে।

সংসদে ৩৫০ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন। কোরাম হলো সংসদ অধিবেশন বসার ন্যূনতম যোগ্যতা। সংসদে ন্যূনতম ৬০ জন সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম গঠিত হয়। সংসদে ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না থাকলে কোরাম সংকট হয়।