'ও বোন'-এর নারী বাইকাররা ছুটে চলেছেন

‘ও বোন’ অ্যাপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নারী বাইকারদের একাংশ। ছবি: সাবরিনা ইয়াসমিন
‘ও বোন’ অ্যাপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নারী বাইকারদের একাংশ। ছবি: সাবরিনা ইয়াসমিন

একদিকে যানজটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার বিরক্তি, অন্যদিকে রোজ রোজ গণপরিবহনে হয়রানি। এ থেকে রেহাই পেতেই নিজের একটি বাহন থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন রাবেয়া বশরী। কিনে নেন একটি স্কুটি। এখন সেই স্কুটিতেই নারী যাত্রীদের সেবা দিয়ে কিছু আয় হচ্ছে তাঁর।

রাইড শেয়ারিং অ্যাপে যুক্ত হয়েছে নারী বাইকারদের নিয়ে নারীদের জন্য রাইড শেয়ারিং সেবা ‘ও বোন’। ‘ও ভাই সলিউশনস লিমিটেড’–এর রাইড শেয়ারিংয়ের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘ও বোন’। এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন রাবেয়া বশরী।

গত ২৮ এপ্রিল থেকে নারীদের জন্য এই বিশেষ সেবা চালু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি নারী বাইকার এই সেবার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন রাজধানীতে। সকাল সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত যেকোনো নারী ও ভাই অ্যাপের ‘ও বোন’ অপশনের মাধ্যমে খুঁজে নিতে পারবেন তার রাইডারকে।

‘ও বোন’-এর রাইডাররা খণ্ডকালীন ও পূর্ণকালীন দুভাবেই কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি রাইডারদের আলাদা করে বাইক, হেলমেট, রেইনকোট সরবরাহ করবে। রাইড শেয়ারিংয়ে আগ্রহী হলে ‘ও ভাই সলিউশন লিমিটেড’-এর নিজস্ব তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

রাবেয়া বশরী এ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১৫৭টি রাইড শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, ‘যানজট এবং গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতেই স্কুটি চালানো শুরু করি। এরপর নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি স্বাধীনভাবে আয়ের উদ্দেশ্যে রাইড শেয়ারিংকে বর্তমানে পেশা হিসেবে নিয়েছি।’ তবে নারী হয়ে অপর একজন নারীকে কোথাও সময়মতো পৌঁছে দিতে পারাটাও তাঁর কাছে আনন্দের।

নাঈমা আক্তার ছয় বছর ধরে ফ্রিডম ১০০ সিসি বাইক চালান। ‘ও বোন’ অ্যাপেও তাঁকে পাওয়া যাবে ১০০ সিসির বাইকার হিসেবেই। রাবেয়া, নাঈমাদের মতো মারিয়া, সুইটিসহ অনেক শিক্ষার্থীই স্বাধীন পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এই রাইড শেয়ারিংকে।

পূর্ণকালীন বাইকারদের জন্য ১২০টি রাইড শেয়ারের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া থাকলেও তা পূরণের বাধ্যবাধকতায় শিথিলতা রয়েছে। ‘ও বোন’–এর সঙ্গে সময় মিলিয়েই রাইডাররা তাঁদের রাইড শুরু করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পূর্ণকালীন রাইডারদের দৈনিক ১০ ঘণ্টা এবং খণ্ডকালীন বাইকারদের জন্য ৬ ঘণ্টার কাজের সময় নির্ধারণ করা রয়েছে। বনশ্রী, গুলশান, মিরপুর, ধানমন্ডি ও যাত্রাবাড়ী—এই পাঁচটি স্থানে রাইডারদের জন্য রয়েছে রেজিস্ট্রেশন জোন। এই এলাকাগুলো থেকে রাইডাররা রেজিস্ট্রেশন করে তাঁদের সেবা চালু করতে পারবেন।

এই অ্যাপের অপর একটি অপশন ‘ইন-আপ’ এসওএস-এই নম্বরে কল করে যাত্রীরা সেবা নিয়ে যেকোনো তথ্য সরাসরি ‘ও ভাই’ সাপোর্ট সেন্টার থেকে জানতে পারবেন। এ ছাড়া অভিযোগ বা পরামর্শও দেওয়া যাবে। এ অ্যাপে যাত্রীদের জন্য হেলমেট, মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। বর্ষায় যাত্রীদের রেইনকোটও সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন ‘ও ভাই সলিউশন লিমিটেড’ কর্তৃপক্ষ।