নেতার সঙ্গে কথা বলার জন্য লন্ডনে এসেছি: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশনার জন্যই লন্ডনে এসেছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব এ কথা জানান।

এ সময় অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। ফখরুল তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, ‘শুধু একটি মাত্র কারণে আমি লন্ডনে এসেছি। নেতার সঙ্গে কথা বলার জন্য, নেতার দিকনির্দেশনা নেওয়ার জন্য।’

কারাগারে বন্দী বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি পড়ে গিয়েছিলেন, হোঁচট খেয়ে পড়ে যাননি। অসুস্থতার কারণে পড়ে গিয়েছিলেন।’ খালেদা জিয়াকে পুরোনো নির্জন কারাগারের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে আটকে রেখে, চিকিৎসা না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে অনুষ্ঠিত ওই ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন মির্জা ফখরুল। এতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক। সাধারণ সম্পাদক কয়সর আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আয়োজনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশে প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদার মামলাটি এমন কোনো মামলা নয় যে তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না। অথচ সম্পূর্ণ গায়ের জোরে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে।’

ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তাঁকে সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সেই মামলা মোকাবিলা করতে গিয়েও তিনি ন্যায়বিচার পাননি।

সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ৭৮ হাজার মামলা। ১৮ লাখ লোককে আসামি করা হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলীসহ পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। ১০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। কোন খবর যাবে না যাবে, টক শোতে কারা কথা বলবে, সেসবও ঠিক করে দিচ্ছে সরকার।

বাংলাদেশের মানুষ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় আছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ধৈর্য, সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গঠনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। ফখরুল বলেন, ‘বহু চেষ্টার পরও আজ পর্যন্ত বিএনপিতে ভাঙন ধরাতে পারেনি তারা। দলের একজন নেতা-কর্মীকেও নিতে পারেনি।’ দলের ঐক্য অটুট আছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, হতাশার কোনো কারণ নেই। রাত্রির পরেই হবে নতুন সূর্যোদয়।