নদী দখল করে পাকা ঘরবাড়ি

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নে করতোয়া নদী দখল করে পাকা বাড়ির নির্মাণকাজ শুরু করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। আজ মঙ্গলবার ছবিটি তোলা। ছবি: প্রথম আলো
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নে করতোয়া নদী দখল করে পাকা বাড়ির নির্মাণকাজ শুরু করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। আজ মঙ্গলবার ছবিটি তোলা। ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বহমান করতোয়া নদী দখল করে পাকা ঘরবাড়ি তৈরি করছেন এক ইউপি সদস্য। এ কারণে নদীর পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে নদীর ওপর নির্মিত ঝপঝপিয়া সেতু। 

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, স্থানীয় পূর্ণিমাগাতী ইউপি সদস্য মো. আলী হোসেন নদীতে পাকা ঘর তৈরি করছেন। তবে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, নদীর ভেতরে তাঁর পৈতৃক জমি রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সরেজমিন ওই এলাকার পূর্ণিমাগাতী-দহপাড়া সড়কের ঝপঝপিয়া সেতুর কাছে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নিচে করতোয়া নদীর মধ্যে পাকা ঘরবাড়ি তৈরির কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ভবনের ভিত তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ৪ শতাংশ জায়গা দখল করে এই ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে করতোয়া নদী বয়ে গেছে। এই নদীর ঝপঝপিয়া এলাকায় নির্মিত হয়েছে একটি সেতু। এই সেতুর নিচে নদীর মধ্যে ফাউন্ডেশন দিয়ে ঢালাই করে ওই ইউপি সদস্য বাড়িটি নির্মাণ করছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইউপি সদস্য এলাকায় খুবই প্রভাবশালী। ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে বহুতল ভবনের ভিতসহ বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।

ঝপঝপিয়া গ্রামের আক্তার হোসেন বলেন, নদী দখল করে এভাবে বাড়ি নির্মাণ করতে নিষেধ করা হলেও তিনি মানছেন না। নদী দখল করে এভাবে বাড়ি নির্মাণ করলে, একদিকে নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে, অন্যদিকে নদীও ভরাট হয়ে যাবে। একই সঙ্গে সেতুটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

জানতে চাইলে সদস্য আলী হোসেন দাবি করেন, ঝপঝপিয়া সেতুর নিচে করতোয়া নদীর ভেতর তাঁদের পৈতৃক জমি আছে। সেই জমিতেই তিনি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। নদী দখল করে নয়। নদীর মধ্যে কীভাবে পৈতৃক জমি থাকে, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং বলেন এর জবাব তিনি প্রশাসনের কাছে দেবেন।

পূর্ণিমাগাতী ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিন বলেন, ‘নদী দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি করা বেআইনি কাজ। আমি আলী হোসেনকে সেখানে ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু সে আমার কথা না মেনে জোরপূর্বক ইচ্ছেমতো ঘরবাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছে।’

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। আগামীকাল বুধবার স্থানীয় তহসিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ নদী দখল করে কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণের নিয়ম নেই।’