কুলাউড়ায় ধর্ষণের শিকার এক স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা, অভিযুক্তকে পাচ্ছে না পুলিশ

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ভয়ভীতি দেখিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি, শিশুটি এখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে কুলাউড়া থানায় মামলা করেছে শিশুটির পরিবার।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে শিশুটির মা বাদী হয়ে সামছার (২৮) নামের এক যু্বককে প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় ওই যুবকের পরিবারের আরও সাত সদস্যকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা করত। একপর্যায়ে সে লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আবার পড়ালেখা শুরু করে। শিশুটি প্রায়ই প্রতিবেশী এক আত্মীয়ের বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যেত। এই সুযোগে প্রায় পাঁচ মাস আগে পার্শ্ববর্তী এলাকার রাজমিস্ত্রি সামছার ওরফে আজাদ (২৮) তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি শিশুটির শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরে শিশুটি ধর্ষণের ঘটনা জানায়। কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, শিশুটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, এ ব্যাপারে শিশুর স্বজনেরা সামছারের বাড়িতে গিয়ে তাঁর অভিভাবকদের কাছে বিচার চান। কিন্তু তাঁদের গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় স্থানীয় সালিসে উভয় পক্ষকে ডাকা হলে সামছার শিশুটির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তখন স্থানীয় ইউপি সদস্য শিশুটির স্বজনদের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে গতকাল বুধবার শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

শিশুটির বড় ভাই মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বোনকে নির্যাতন করা হয়েছে। এই ঘটনার বিচার চাই।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঘটনা জানাজানির পর থেকে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে অভিযুক্ত যুবক ও তাঁর পরিবার বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সামছার ও তাঁর বড় ভাই রহম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, গ্রামের লোকজন সালিসে বসেছিলেন। সামছার অস্বীকার করায় তিনি শিশুর স্বজনদের পুলিশের কাছে যেতে বলেন।

কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের প্রতিবেদন আছে। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে সামছারদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাঁর পরিবারের লোকেরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। সামছারকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।