সাভারে ট্রাকে র্যাকার লাগিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ

র‌্যাকার দিয়ে ট্রাকে চাঁদাবাজি। সাভার, ঢাকা, ১৪ জুন। ছবি: প্রথম আলো
র‌্যাকার দিয়ে ট্রাকে চাঁদাবাজি। সাভার, ঢাকা, ১৪ জুন। ছবি: প্রথম আলো

ঈদের তিন দিন আগে থেকে মহাসড়কে ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এরপরও আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ট্রাক চলাচল করেছে। আর এই ট্রাক চলাচলের সুযোগ করে দিয়ে পুলিশ চাঁদাবাজি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে যাত্রী পরিবহন করেছে কয়েক শ ট্রাক। পুলিশের সামনেই বিভিন্ন স্ট্যান্ডে ট্রাকে যাত্রী তোলা হয়। যাত্রী তোলার সুযোগ করে দিয়ে পুলিশকে টাকা হাতিয়ে নিতেও দেখা যায়। যার ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখেও পড়েন এ প্রতিবেদক।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে কয়েক শ যাত্রী দাঁড়িয়েছিলেন বাসের অপেক্ষায়। বাস না পেয়ে অনেকে ট্রাকে বাড়ি যেতে বাধ্য হন। হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে দুই ট্রাকে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হচ্ছিল। যাঁদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে এসে পৌঁছে পুলিশের র‌্যাকার। এরপর একটি ট্রাকের সঙ্গে র‌্যাকারের শিকল বেঁধে দেওয়া হয়। তখনো ওই ট্রাকসহ পেছনের আরেকটি ট্রাকে যাত্রী তোলা হচ্ছিল। র‌্যাকার লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে ওঠেন ওই ট্রাকের চালক ও সেখানে থাকা স্থানীয় বেশ কিছু দালাল। তাঁরা র‌্যাকারচালক রতিশের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলতে থাকেন। এ সময় নিচে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক নজর রাখছিলেন কনস্টেবল হাফিজ। একপর্যায়ে টাকা পেয়ে ট্রাক থেকে র‌্যাকারের শিকল খুলে দিলে যাত্রী নিয়ে ট্রাকটি বগুড়ার উদ্দেশে রওনা হয়।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে র‍্যাকার দিয়ে ট্রাকে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাভার, ঢাকা, ১৪ জুন। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে র‍্যাকার দিয়ে ট্রাকে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাভার, ঢাকা, ১৪ জুন। ছবি: প্রথম আলো

কত টাকা দিয়ে ছাড়া পেলেন, জানতে চাইলে ট্রাকচালক নিজের পরিচয় না দিয়ে বলেন, ‘দিছি, ট্যাকা না দিলে তো ট্রাক ছাড়ে না।’ স্থানীয় লোকজন জানান, র‌্যাকার দিয়ে টেনে থানায় নেওয়ার ভয় দেখিয়ে কনস্টেবল হাফিজ ও র‌্যাকারচালক রতিশ বিকেলে অন্তত ৩০টি ট্রাক থেকে তিন থেকে চার হাজার টাকা আদায় করেছেন। এ সময় পুলিশের কোনো কর্মকর্তাকে সেখানে দেখা যায়নি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল হাফিজ ও র‌্যাকারচালক রতিশ কোনো উত্তর না দিয়ে খেপে যান এবং একপর্যায়ে এই প্রতিবেদকের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাভার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।