বিনোদনকেন্দ্রে কোনো চমক নেই

শ্যামলীর ডিএনসিসি ওয়ান্ডার‍ পার্কের পুরোনো রাইডটি ঘষামাজা করে ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ছবিটি গতকালের।  প্রথম আলো
শ্যামলীর ডিএনসিসি ওয়ান্ডার‍ পার্কের পুরোনো রাইডটি ঘষামাজা করে ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ছবিটি গতকালের। প্রথম আলো
ঈদের ছুটিতে আনন্দের জন্য নগরবাসী যেসব বিনোদনকেন্দ্রে যান সেখানে কোনো নতুন আয়োজন নেই।


ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে নগরবাসীর জন্য বিশেষ কোনো আয়োজন নেই। পুরোনা রাইডগুলোই ঘষামাজা করে ঈদের জন্য শিশুপার্ক প্রস্তুত করা হচ্ছে। আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ করা হয়েছে মিরপুর চিড়িয়াখানার আয়োজন।

গতকাল বুধবার দুপুরে শাহবাগের শিশুপার্ক ঘুরে দেখা গেছে, মূল ফটকের সামনেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো সংস্কারে হাত দেওয়া হয়নি। বিগত সময়ে শিশুপার্কটি যেমন ছিল, ঠিক তেমনই আছে। দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় কিছু নেই।

শিশুপার্কে এখন মাত্র নয়টি রাইড চালু আছে। এর মধ্যে বিশ্বময় চক্র, ঝুলন্ত চেয়ার, ব্যাটারি কার, আনন্দ ঘূর্ণি ও ছোটদের ট্রেন উল্লেখযোগ্য। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই পার্কে প্রবেশ মূল্য ১৫ টাকা আর প্রতিটি রাইড ১০ টাকা।

এই পার্কের সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের দিন থেকে টানা পাঁচ দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য শিশুপার্ক খোলা থাকবে।

শ্যামলীর শিশুমেলা (ডিএনসিসি ওয়ান্ডার‍ পার্ক, শ্যামলী) ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে পুরোনো রাইডগুলোই ঘষামাজার কাজ চলছে। ইঞ্জিন পরীক্ষা করা হচ্ছে। পুরোনো জিনিসগুলোকে রং করে নতুন করার কাজ চলছে। শিশুদের জন্য ব্যবহৃত প্রায় ৩৫টি রাইডের যন্ত্র বিকল অবস্থায় পড়ে আছে।

ঈদ উপলক্ষে নতুন কোনো রাইড এই পার্কে আনা হয়নি। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিদিনই এই পার্ক খোলা থাকছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই পার্কে প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা আর প্রতিটি রাইড ৪০ টাকা।

পার্কটির ম্যানেজার মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। আর একজন নিরাপত্তাকর্মী প্রথম আলোকে জানান, ঢাকার আশপাশে ভালো মানের কয়েকটি পার্ক হওয়ায় তাঁদের এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে।

এদিকে মিরপুর চিড়িয়াখানায়ও ঈদকে ঘিরে নতুন কোনো প্রাণী আনা হয়নি। তবে দর্শনার্থীদের জন্য কর্তৃপক্ষ এবার পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করেছে। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য যাত্রীদের বসার স্থানগুলো সংস্কার করা হয়েছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।

গত এক মাসে চিড়িয়াখানায় অনেক নতুন অতিথি এসেছে। বাচ্চা দিয়েছে মায়া হরিণ, জেব্রা, অ্যারাবিয়ান হর্স, ইন্ডিয়ান হর্সসহ বেশ কয়েকটি প্রাণী। যথারীতি সকাল আটটা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর এফ এম নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। নিরাপত্তা বাড়িয়েছেন, যাত্রীদের বিশ্রামাগার নতুন করে সংস্কার করেছেন। তিনি জানান, সাফারি পার্ক থেকে আনা আফ্রিকান চারটি সাদা সিংহ ও দুটি কালো ভালুকের সাক্ষাৎ দর্শনার্থীরা উপভোগ করবে। এ ছাড়া শিগগির দুটি ক্যাঙারু ও দুটি উট আসবে বলেও জানান তিনি।

রাজধানীর বিজয় সরণি মোড়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার ঈদের দিন ও পরদিন সাধারণত বন্ধ থাকে। তবে এবারই ঈদের পরদিন নভোথিয়েটার খোলা থাকবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদকে ঘিরে নভোথিয়েটারেও বিশেষ কোনো আয়োজন নেই। সাধারণত যেদিন খোলা থাকে, সেদিন এখানে ছয়টি প্রদর্শনী হয়ে থাকে। তবে দর্শনার্থী বেশি হলে ঈদে এই সংখ্যা বাড়তে পারে।

শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর সাধারণত ঈদের দিন বন্ধ থাকে। ঈদের পরদিন শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোর এবং জ্যেষ্ঠ নাগরিকেরা বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বিনা মূল্যে জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারবেন। আর ঈদের তৃতীয় দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং ঈদের চতুর্থ দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শিক্ষা অফিসার সাঈদ সামসুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের পরদিন ও এর পরদিন শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে বিনা মূল্যে চারটি শিশুতোষ ছবি প্রদর্শন করা হবে।

এ ছাড়া সদরঘাটে অবস্থিত আহসান মঞ্জিলও ঈদের দিন বন্ধ থাকবে। আহসান মঞ্জিলসহ জাতীয় জাদুঘরের অধীনে থাকা সব কটি জাদুঘরে দর্শনার্থীদের প্রবেশসময় একই থাকবে।