সংসদে ব্যাংক লুটপাটের শাস্তি দাবি

ব্যাংক খাতে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠেছে জাতীয় সংসদে। রোববার জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংসদেরা এই দাবি জানান।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়নের বর্ণনা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের ওপর তলায় কিছু দুর্নীতি হচ্ছে, লুটপাট হচ্ছে, সেই জায়গায় শৃঙ্খলা আনা দরকার। এই লুটেরাদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে, এক বিন্দু ছাড় দেওয়া যাবে না। যাতে কেউ ব্যাংকের টাকা আর লুটপাট করতে না পারে। এ ক্ষেত্রে শূন্য সহিষ্ণুতা দেখাতে হবে।’ তিনি ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নামে দণ্ডিত অপরাধী খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের মাঠে ফেরত আনার পাঁয়তারা চলছে। নির্বাচন কোনো অপরাধীদের হালাল করার মাধ্যম নয়। লাল কার্ড নিয়ে ক্ষমতার বাইরে রাখা খালেদা জিয়া আর মাঠে নামতে পারেন না। ক্ষমতার বাইরেই তাঁকে থাকতে হবে। যারা নির্বাচন ইস্যুতে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত দেয়, তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়।’

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাংসদ সালমা ইসলাম বলেন, ব্যাংক ডাকাতদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে নানাভাবে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রশ্ন তুলেন, ব্যাংক ডাকাতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, তাঁদের হাত কী সরকারের চেয়েও লম্বা? মাদক নির্মূলের জন্য ক্রসফায়ারের ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। কিন্তু ব্যাংক ডাকাতদের ন্যূনতম শাস্তি দেওয়া যাচ্ছে না কেন? ব্যাংক ডাকাত এবং তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতাদের শাস্তি দিতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদক পাড়া-মহল্লায় বিস্তার করেছে। এই অবস্থার উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মাদকের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সংগ্রাম চলছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হচ্ছে। যারা আত্মসমর্পণ করছে, তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। যারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করছেন, যেখানে অবৈধ অস্ত্র, সেখানে অবৈধ লেনদেন, যখনই অবৈধ জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হানা দেয়, সেখানে ‘ফায়ার ওপেন’ করে। সেখানে বন্দুকযুদ্ধ হয়। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ইচ্ছা করে কাউকে হত্যা করতে যায় না।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশ সরকার প্রমাণ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ব্রিটিশ সরকারের কমপানিস হাউসের ওয়েবসাইটে তারেক রহমান সম্পর্কে সার্চ দিলে হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালট্যান্ট লিমিটেড নামের একটি নতুন চালু হওয়া কোম্পানি পাওয়া যাবে। তারেক রহমানকে এই কোম্পানির পরিচালক বলা হয়েছে। ২০১৫ সালে জুলাইয়ে প্রথম গঠনকালে তাঁর জাতীয়তা বলা হয়েছে ব্রিটিশ। তার চার মাস পরে পরিবর্তন করে বলা হয়েছে বাংলাদেশি।

আলোচনায় অংশ নেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মৎস্য ও পশু সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, সরকারি দলের সাংসদ সুবিদ আলী ভুইয়া, এ কে এম রহমতুল্লাহ, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সিমিন হোসেন, জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান, রওশন আরা মান্নান প্রমুখ।