খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে পাতানো নির্বাচন করতে চায় সরকার: মঈন খান

জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় আবদুল মঈন খান। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় আবদুল মঈন খান। ছবি: সংগৃহীত

আবদুল মঈন খান অভিযোগ করেছেন, সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আবারও ২০০৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচন করে বিএনপিকে গৃহপালিত বিরোধী দল বানাতে চায়। সরকারের সেই প্রচেষ্টা সফল হবে না।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় আবদুল মঈন খান এ মন্তব্য করেন।

আবদুল মঈন খান বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে সরকারকে অবশ্যই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরিতে বাধ্য করা হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন করা হবে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে খালেদা জিয়া চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন।

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মঈন খান বলেন, বিএনপি কোথাও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারে না। জাতীয় প্রেসক্লাব বা দলীয় কার্যালয়ের সামনে যেখানেই যে কর্মসূচি দেওয়া হয়, সেখানে সরকার বাধা দিচ্ছে। হোক সেটি কালো পতাকা প্রদর্শন বা অনশন কর্মসূচি। তিনি আরও বলেন, শুধু বিএনপির কর্মসূচি বা বিএনপির ওপর নয়, যারাই আন্দোলন করছে, তাদের ওপর সরকার নির্যাতন করছে। কিছুদিন আগেও কোটা আন্দোলনকারীদের কীভাবে হামলা করে নিয়ন্ত্রণ করেছে। বিএনপি বা বিরোধী রাজনৈতিক দল নয়, ভিন্নমতের যারাই কথা বলে, সরকার তাদের দমন করছে।

বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না—আওয়ামী লীগ নেতাদের এ মন্তব্যের সমালোচনা করে মঈন খান বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে একমত। বিএনপি আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো লগি-বৈঠার আন্দোলন করতে পারে না। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করি। তাই আমাদের আন্দোলন তাদের কাছে পছন্দ হবে না।’

ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সমালোচনা করে মঈন খান আরও বলেন, ‘আমরা আপনাদের একটি চ্যালেঞ্জ করি। আসুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে, ব্যারাকে রেখে রাস্তায় নামুন, আমরাও আসি। দেখি কার আন্দোলন কত বেশি হয়। আন্দোলনে কারা টেকে, সেটা রাজপথেই প্রমাণ হয়ে যাবে। সামনে-পেছনে, ডানে-বাঁয়ে পুলিশ, র‍্যাব রেখে বড় বড় কথা বলা যায়। রাজপথে সাপের মতো লাঠি দিয়ে মানুষ পিটিয়ে মারা কখনো আন্দোলন হয় না। আমরা সে আন্দোলনে বিশ্বাস করি না।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী লর্ড কার্লাইলের বিষয়ে মঈন খান বলেন, লর্ড কার্লাইলকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া হলো কি হলো না, সেটা কথা নয়। তিনি বলেন, কিন্তু তাঁকে কেন বাংলাদেশের ভিসা দেওয়া হলো না? তাঁকে তো খালেদা জিয়ার আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

লর্ড কার্লাইল বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মঈন খান আরও বলেন, লর্ড কার্লাইল কেন ভারতের ভিসা নেবেন? তাঁকে কেন বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হলো না? তাঁকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ কি নিজেদের ইতিহাস ভুলে গেছে? আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় বিদেশ থেকে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়নি? তাঁকে তো তখন বাংলাদেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়নি। তাহলে কার্লাইলকে কেন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি? কেন তাঁকে বাংলাদেশের ভিসা দেওয়া হয়নি?

সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের বিষয়ে মঈন খান বলেন, আজ সরকার গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের টুঁটি চেপে ধরে রেখেছে। নিজেদের পছন্দমতো লিখে দেওয়া কথা প্রচার করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সরকার গণমাধ্যমকে জোর করে নিজেদের পক্ষে বলে জনগণকে শোনাচ্ছে।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম প্রমুখ।