গৃহকর্মী নির্যাতন, পুলিশ সার্জেন্টের স্ত্রী গ্রেপ্তার

ঢাকার কমলাপুরের বাসায় গৃহকর্মী মাজেদা বেগমকে (৩৫) নির্যাতনের মামলায় ডিএমপির পুলিশ সার্জেন্ট হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মাহবুবা আক্তার (২৪) গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত গভীর রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বাবার বাড়ি থেকে তাঁকে লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

আজ রোববার দুপুরে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আমলি আদালতের বিচারক মেহেদী হাসান মণ্ডল মাহবুবা আক্তারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের পাটোয়ারীটারী গ্রামের বাসিন্দা পুলিশ সার্জেন্ট হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মাহবুবা আক্তার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রায়হান আলী প্রথম আলোকে বলেন, মাহবুবা আক্তারকে গৃহকর্মী মাজেদা বেগমকে নির্যাতনের মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামি লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাঠকর্মী মঞ্জু আরা বেগমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মঞ্জু আরা সম্পর্কে মাহবুবা আক্তারের খালা। তিনি লালমনিরহাটের মাজেদাকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে ঢাকার কমলাপুরে মাহবুবার বাসায় নিয়োগ করেছিলেন। গুরুতর অবস্থায় মাজেদা ঢাকা থেকে এসে লালমনিরহাটে মঞ্জু আরা বেগমের বাসায় উঠেছিলেন। খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ২৫ জুন মোগলহাটের ইটাপোতা গ্রামে বাড়িতে নিয়ে যান। ওই দিন রাতেই মাজেদাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ জুলাই পর্যন্ত তাঁর সেখানে চিকিৎসা চলে। এ ঘটনায় মাজেদার বাবা কলিমুদ্দিন বাদী হয়ে গত ২৬ জুন রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে একটি মামলা করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাজেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিনি যে বাসায় কাজ করতেন, সেখানে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না। কাজ হয়ে গেলে বসে থাকতে দেখলে বা কাজে ছোটখাটো কোনো ভুলত্রুটি হলে গৃহকর্ত্রী শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিতেন। এভাবে নির্যাতনের ঘটনা দেখে গৃহকর্ত্রীর স্বামী তাঁকে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের বাসে তুলে দেন।

এদিকে মাজেদার বাবা কলিমুদ্দিন ১ জুলাই মারা গেছেন। মেয়েকে নির্যাতন এবং মামলা চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে পরিবার ও প্রতিবেশীরা।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, মামলার এজাহার ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মাহবুবা আক্তারের স্বামী পুলিশ সার্জেন্ট হাবিবুর রহমানের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।