নড়াইল ও নাটোরে র‍্যাব-পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ২

নড়াইলের লোহাগড়ায় পুলিশের সঙ্গে ও নাটোরের লালপুর উপজেলার বিজয়পুর এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা দুটি ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ বলছে, লোহাগড়ায় নিহত ব্যক্তি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নাটোরে নিহত ব্যক্তি মাদক ব্যবসায়ী।

পুলিশের দাবি, নড়াইলের লোহাগড়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ব্যক্তি ডাকাত দলের সঙ্গে ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে লোহাগড়া থানার পুলিশের একটি দল অভিযানে যায়। ডাকাতেরা এ সময় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। একপর্যায়ে তাদের দলের অন্য সদস্যরা পালিয়ে গেলেও ওই বাগানের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। সেখান থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে দ্রুত লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রাত তিনটার দিকে লোহাগড়া পৌর এলাকার কচুবাড়িয়ায় পাকা রাস্তার পাশে গৌরাঙ্গ দত্তের বাঁশবাগানে এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য আহত হন। নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। তাঁর বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর।

লালপুরের বিজয়পুর এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আহাদুল মোল্লা (৩২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি লালপুরের তিলকপুর গ্রামের মৃত মোমিন মোল্লার ছেলে।

র‍্যাবের দাবি, আহাদুল মোল্লা মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, গতকাল বেলা একটার দিকে সাদাপোশাকের লোকজন আহাদুলকে বাড়ির পাশ থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল।

র‍্যাব-৫–এর নাটোর ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে বিজয়পুর এলাকায় একদল মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে গুলিবিনিময়ের সময় আহাদুল মোল্লা গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে র‍্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

নাটোর র‍্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর শিবলী নোমানের ভাষ্য, নিহত আহাদুল একজন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের কয়েকটি মামলা রয়েছে।

লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক আহাদুল মোল্লার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহাদুলকে মৃত অবস্থায় ৩টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে নিয়ে আসে র‍্যাব। তাঁর শরীরে তিনটি গুলির জখম রয়েছে।

লালপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

আহাদুল মোল্লার স্ত্রী রুলিয়া বেগমের তথ্যমতে, গতকাল বেলা একটার দিকে তাঁর স্বামী তাঁদের বাড়ির পাশের ধানের জমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় লুঙ্গি পরা কিছু লোক তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। খবর পাওয়ার পর তিনি লোকজনকে দিয়ে তাৎক্ষণিক লালপুর থানা, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন কার্যালয়ে তাঁর স্বামীর খোঁজ নেন। কেউ তাঁর সন্ধান দিতে পারেনি। সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর পান।