বরিশালে নৌকার মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

বরিশাল সিটির উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকার একটি মাঠে ‘উঠান’ বৈঠকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। ছবি: প্রথম আলো
বরিশাল সিটির উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকার একটি মাঠে ‘উঠান’ বৈঠকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে উঠান বৈঠকের নামে জনসভা করার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে মহানগরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদারপাড়ায় এই ‘উঠান’ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

অভিযোগ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আব্বাস চৌধুরী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমানকে ফোন করা হলে কেউই ফোন ধরেননি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকার বিপিএড কলেজের বিপরীত পাশের একটি মাঠে শামিয়ানা দিয়ে বড় একটি প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। লোকজনের বসার জন্য প্যান্ডেলের নিচে হাজার খানেক চেয়ার রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মাইকের জায়গায় বড় বড় দুটি লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তা ফাঁকা করার জন্য একাধিক হ্যান্ড মাইক ব্যবহার করা হচ্ছে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী সভা-সমাবেশ করতে পারবেন না। তবে একটি মাইক ব্যবহার করে পথসভা করতে পারবেন।

আজ রাতে ‘উঠান’ বৈঠক এলাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল আসতে দেখা গেছে। প্যান্ডেলের নিচে থাকা লোকজনের জন্য লাউড স্পিকারে গান বাজানো হচ্ছে। গানটিতে নির্বাচনে সাদিক আবদুল্লাহর জন্য ভোট চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নৌকা মার্কার জয় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

রাত সোয়া আটটার দিকে মঞ্চে ওঠেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি নেতা-কর্মীদের একটি বহর নিয়ে ‘উঠান’ বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক এলাকার কিছু দূর আগে তিনি তাঁর গাড়িবহর থেকে নামেন। এরপর বাকি পথ হেঁটে বৈঠকের স্থানে প্রবেশ করেন।

এ সময় ‘উঠান’ বৈঠকের সঞ্চালক বলছিলেন, আজকের এই উঠান বৈঠক জনসভায় রূপ নিয়েছে। এত মানুষের আগমন এই জনসভাকে সফল করবে।

মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ‘উঠান’ বৈঠকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার ফুপু, এটা তো আমি বলি নাই। আমার ফুপুকে (প্রধানমন্ত্রী) যদি জয় উপহার দিতে পারি, তাহলে আমি যা আনতে পারব, অন্য কেউ তা আনতে পারবে?’ তিনি বলেন, এটা জাতীয় নির্বাচন না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে বিএনপি যেভাবে দোষারোপ করছে, আন্দোলনের কথা বলছে, তাতে কি আপনারা চান আবার উন্নয়ন বন্ধ হোক?

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, জনসভা করা আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি অবগত ছিলাম না। এখনই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলছি।

বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি ও মজিবর রহমান সরোয়ারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সচিব এবায়দুল হক বলেন, এর আগেও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে একাধিকবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন অভিযোগ গ্রহণ করে কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।