ওয়াজ শুনে, বই পড়ে ও ভিডিও দেখে হামলায় উদ্বুদ্ধ হন ফয়জুল

ফয়জুল হাসান
ফয়জুল হাসান

বিভিন্ন ওয়াজ শুনে, বই পড়ে ও ইন্টারনেটে ভিডিও দেখে প্রভাবিত হয়েই অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যার চেষ্টা করেন ফয়জুল হাসান ওরফে ফয়েজ। এই হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ছয়জন জড়িত। এই ছয়জনকে আসামি করে কাল বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেবে পুলিশ।

সিলেট নগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আজ বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায় পুলিশ। যে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন: ফয়জুল, তাঁর বন্ধু মো. সোহাগ মিয়া, বাবা আতিকুর রহমান, মা মোছাম্মৎ মিনারা বেগম, মামা ফজলুর রহমান ও ভাই এনামুল হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ। এ সময় নগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি) ফয়সাল মাহমুদ, পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) সুহেল আহমেদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফয়জুল ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফয়জুল তাঁর বন্ধু সোহাগের কাছ থেকে একটি ৮ জিবি মেমোরি কার্ড নেন। এতে জসিম উদ্দিন রাহমানী, তামিম উল আদনানীসহ বিভিন্ন জনের ওয়াজ শুনে তিনি জিহাদে উদ্বুদ্ধ হন। এ ছাড়াও নানাভাবে ফয়জুলের ধারণা হয়, জাফর ইকবাল ইসলামকে কটাক্ষ করেছেন। জবানবন্দিতে ফয়জুল স্বীকার করেন, হামলার প্রায় এক বছর আগে জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফয়জুল। হামলার তিন-চার মাস আগে তিনি সিলেট নগরের আল হামরা মার্কেটের নিচ তলার দোকান থেকে একটি ছুরি কেনেন। পরে জাফর ইকবালকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। গত ৩ মার্চ বিকেল চারটার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে যান। হামলার আগে তিনি ওই স্থানে এক ঘণ্টা রোবোটিকস প্রতিযোগিতা দেখেন। পাঁচটা ১০ মিনিটের দিকে জাফর ইকবালের পেছনে গিয়ে দাঁড়ান ও সুযোগ খুঁজতে থাকেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালান।

এই ঘটনায় ওই দিনই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে সিলেট নগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। মামলায় ঘটনাস্থলের বিভিন্ন স্থিরচিত্র, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, মুঠোফোনের কল তালিকা ও অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে পুলিশ ছয়জনকে চিহ্নিত করে।