ভোটের দিন মাটি কামড়ে মাঠে থাকব

মির্জা আব্বাস । ফাইল ছবি
মির্জা আব্বাস । ফাইল ছবি

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়কারী মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘নির্বাচনের দিন মাটি কামড়ে হলেও আমরা মাঠে থাকব।’ তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বলেন, বিএনপিকে অত্যাচার করে পরাস্ত করা যাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস এ অভিযোগ করেন।

মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, এখন নির্বাচনী মাঠে কেবল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসব বিরাজ করছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে, জেলে ঢুকিয়ে, হুমকি দিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেরা উল্লাস করছে। তিনি দাবি করেন, বরিশাল থেকে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনী পরিবেশ হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। ইতিমধ্যে বরিশাল মহানগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের সময় বিএনপির ১৯ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মির্জা আব্বাস আরও অভিযোগ করেন, গণসংযোগের সময় ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী আবুল বাশার, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের রুবেল ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আরও এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে পুলিশ বিএনপির ১৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঢাকার সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপিপন্থী কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রথমে অর্থের লোভ দেখিয়ে বসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে ব্যর্থ হয়ে এখন পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এ কারণে বিএনপির নেতা-কর্মীরা লুকিয়ে আছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে বহিরাগত লোক এনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাসায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এরা ভোটের দিন বিএনপি-আওয়ামী লীগের ব্যাজ লাগিয়ে নৌকায় সিল মারার পরিকল্পনা করছে। এ সময় তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরিশালে অবস্থানরত বহিরাগতদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। না হলে নির্বাচনের দিন বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, প্রতিদিনই বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, মামলা-হামলা করে হয়রানি করার অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার বরাবর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখন আর বিএনপির অভিযোগ গ্রহণ করছে না।

বিএনপির এসব অভিযোগ বিষয়ে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আব্বাস চৌধুরী বলেন, বিএনপি নেতারা নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই একের পর এক এমন অসত্য ও কাল্পনিক অভিযোগ করে যাচ্ছেন। কিন্তু বরিশালে এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিএনপিসহ সব প্রার্থী প্রতিদিন নির্বিঘ্নে প্রচার চালাচ্ছেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও উপকমিশনার (ডিবি) মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বরিশাল বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব এবায়দুল হক, উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।