যেভাবে রাকিবকে চিনতে পেরেছে পুলিশ

পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরে টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন জেমএমবির জঙ্গি রাকিব হাসান। আজ রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে সখিপুর থানা পুলিশ।

সখিপুরের তক্তারচালা গ্রাম থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হয় রাকিব হাসানকে। সদ্য শেভ করা মুখ ও হাতে-পায়ে ডান্ডাবেড়ির দাগ দেখে তাঁকে সন্দেহ করে পুলিশ। তক্তারচালা নামে ওই গ্রামটি সখিপুর ও মির্জাপুর থানার মাঝামাঝি জায়গায়। চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানোর সময় ধরা পড়েন রাকিব হাসান। কীভাবে রাকিব হাসান ধরা পড়লেন, তার বর্ণনা দিয়েছেন মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল দত্ত।

সকাল থেকেই চলে তল্লাশি

এসআই শ্যামল দত্ত জানিয়েছেন, সকালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে জঙ্গি মামলার তিন আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়। সখিপুর ও মির্জাপুরের মাঝামাঝি হওয়ায় তক্তারচালা গ্রামে পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। ওই এলাকা দিয়ে যাওয়া সব গাড়িতে তল্লাশি চালাতে থাকে পুলিশ।

সদ্য শেভ করা মুখ ও ডান্ডাবেড়ির দাগ দেখে সন্দেহ

বেলা দুইটার দিকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন রাকিব হাসান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাসেল নামে আরও একজন যুবক। তল্লাশি চালানোর সময় এসআই শ্যামল দত্তের সন্দেহ হয় রাকিবকে দেখে। কারণ তার মুখ ছিল সদ্য শেভ করা। প্রিজনভ্যান থেকে পালানোর পরই দাড়ি কামিয়েছিলেন রাকিব। কিন্তু সময় কম থাকায় সম্ভবত দাঁড়ি কাটতে গিয়ে তার গাল কয়েক জায়গায় কেটে যায়। এ ছাড়া তার থুতনির নিচে অল্প কিছু দাড়ি ছিল। সময় স্বল্পতার কারণে তিনি ঠিকমতো দাঁড়ি শেভ করতে পারেননি।

এসআই জানিয়েছেন, দাঁড়ি দেখে সন্দেহ হওয়ায় রাকিব হাসানকে আরও ভালো করে তল্লাশি করেন তিনি। এ সময় তিনি রাকিব হাসানের হাতে ও পায়ে ডান্ডাবেড়ির দাগ দেখতে পান। রাকিবের পায়ে নতুন স্যান্ডেল ছিল। কিন্তু পুলিশের চোখ এড়াতে পারেননি তিনি। এ সময় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ রাকিবকে গ্রেপ্তার করে।

থানায় গিয়ে টালবাহানা

সখিপুর থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে রাকিব হাসান তাঁর পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করেন। তিনি জানান যে তার নাম রাসেল। পুলিশকে তিনি বারবার বলতে থাকেন তিনি রাকিব হাসান নন।

তবে পুলিশ তাঁকে শনাক্ত করে। কারা সূত্র অনুসারে রাকিব হাসানের পুরো নাম রাকিব হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাসেল।

কে এই রাকিব হাসান?

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের হাই সিকিউরিটিতে ছিলেন রাকিব হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাসেল।  তাঁর বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহের বংশীবেল এলাকায়। তিনি জেএমবির শুরা সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা বিচারাধীন। চারটি মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে, এর মধ্যে একটিতে তিনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।