বিএনপি ও জামায়াতের ভাষা এক হয়ে গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবির। ছবি: প্রথম আলো
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবির। ছবি: প্রথম আলো

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে ঘর করতে করতে বিএনপি ও জামায়াতের ভাষা এক হয়ে গেছে। তাদের আমরা আলাদা করতে পারছি না।’

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘দুই-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যখন বলেন মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন আছে, তখন কী করে তাঁর ওপর আস্থা রাখব। শহীদের সংখ্যা নিয়ে তো প্রশ্ন পাকিস্তানিরা করে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন শাহরিয়ার কবীর। আজ শনিবার দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

শাহরিয়ার কবির বলেন, জিয়াউর রহমানের সামরিক পরিচয় কী? মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার আগে জিয়াউর রহমান আইএসআইয়ের কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি আইএসআইতে নিযুক্ত হয়েছিলেন। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা চলছে। ১৯৭২-এর পর থেকেই আইএস এই চক্রান্ত করছে।

শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধুর নশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে সংবিধান থেকে যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাস মুছে ফেললেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও বন্ধ করে দিলেন। ’৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই এমন করলেন। তিনি কি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন? কার নির্দেশে এই কাজটা করলেন?

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে সবাই অংশ নেবে। সব দলকেই বলেছি, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত সহিংস নির্বাচন বলে আশঙ্কা করছি। এই সহিংসতা সংখ্যালঘুদের ওপর হবে তা নয়; তারা আমাদেরও টার্গেট করছে।’ তিনি আরও বলেন, তারা এমন ভয়াবহ একটা সন্ত্রাসের পরিকল্পনা নিয়েছে। যদি জানে তারা নির্বাচনে হারবে, তারা সন্ত্রাসের পথ নেবে। দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাবে। সে জন্য মুক্তিযুদ্বের সপক্ষের শক্তিকে সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে আমরা সংসদে দেখতে চাই। যে দলেরই হোক না কেন। ২৭ বছর ধরে বলে যাচ্ছি, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে পবিত্র সংসদ আমরা পেয়েছি, সেখানে আমরা ’৭১-এর ঘাতক-দালাল, যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারীদের দেখতে চাই না। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সে জন্য মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির সবাইকে এক জায়গায় দাঁড়াতে হবে।’
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নির্মূল কমিটির আইন সম্পাদক নাদিয়া চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মকবুল-ই-এলাহী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার। আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।