ফেসবুকে এগিয়ে কামরান, আরিফ তৃতীয়

বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরী
বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে শনিবার রাত ১২টায়। প্রার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের পক্ষে ভোট চাইছেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারের বাহুল্য রয়ে গেছে। মেয়র প্রার্থীদের ফেসবুক পেজে লাইকের সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে আছেন সরকারদলীয় প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ফেসবুক পেজে লাইকের দিক থেকে আছেন তৃতীয় স্থানে।

নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রধান প্রার্থীদের পক্ষে ফেসবুকে পেজ খোলা হয়। সেই পেজগুলোতে শেষ মুহূর্তেও নির্বাচনী ইশতেহারসহ নানা বিষয় তুলে ধরছেন প্রার্থীর সমর্থকেরা। নির্বাচনী প্রচারের ভিডিওসহ নানা আহ্বান তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। সমর্থকেরা জয়ের আশাবাদ এবং নানা শঙ্কা নিয়ে মন্তব্য করছেন।

প্রধান প্রার্থীদের ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা যায়, সিলেট সিটি নির্বাচনে ছয় মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বেশি লাইক রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের। আজ রোববার রাত অাটটা পর্যন্ত কামরানের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৮৫ জন। দ্বিতীয় আছেন জামায়াতের প্রার্থী (স্বতন্ত্র) এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তাঁর ফেসবুক পেজে লাইক–সংখ্যা ৮২ হাজার ৫৮৪। বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী আছেন তৃতীয় স্থানে। তাঁর ফেসবুক পেজে লাইক দিয়েছেন ৭৭ হাজার ৬৭৯ জন।

স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, ফেসবুকে লাইকের সংখ্যার ওপর ভোটের ফল নির্ভর করবে, এমনটা নয়। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সিলেটের একজন তরুণ বললেন, ফেসবুকে বুস্ট করে লাইকের সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তাই ফেসবুকের ওই চিত্র অনেকাংশে বাস্তব না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সিলেটে শেষ মুহূর্তের ভোটের চিত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, এখানে ভোটাররা একরকম সতর্ক অবস্থানে আছেন। ভোট নিয়ে মন্তব্য করছেন না। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে আরিফুল ও কামরানের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সুষ্ঠু ও সুন্দর সম্প্রীতির একটি নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন তাঁরা।

গত কয়েক দিনে সিলেটে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলে পুলিশি ভূমিকায় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ আর শঙ্কা রয়েছে। আরিফুল হক চৌধুরীর অভিযোগ, তাঁর নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বাড়িঘরে তল্লাশি চালিয়ে নেতা-কর্মীদের ইতিমধ্যে বাড়িছাড়া করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরিফুলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিবসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে। মামলা হয়েছে অন্তত ৩০০ জনের বিরুদ্ধে। তাই বিএনপির নেতা-কর্মীরা অনেকটা কোণঠাসা।

তবে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পক্ষে বলা হচ্ছে, পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। নৌকার বিজয়ের আঁচ পেয়ে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

দুই দলের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ভেতরই সরকারি দল ছাড়া অন্যদের আশঙ্কা এজেন্ট নিয়ে। ভোটের দিন সব কেন্দ্রে তাঁরা এজেন্ট দিতে পারবেন কি না অথবা এজেন্টরা কেন্দ্রে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রথম মেয়র। ২০০৩ সালের ২০ মার্চ তিনি প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে টানা দুই মেয়াদ এ দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট জরুরি অবস্থা চলাকালে কারাবন্দী অবস্থায় নির্বাচন করে তিনি আরারও সিলেটের মেয়র হন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে ৩০ হাজার ভোটে হারিয়ে সিলেটের নতুন মেয়র নির্বাচিত হন।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সিলেটে ভোট হবে। ১৩৪টি ভোটকেন্দ্রে ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।