রেলের জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ ঘর তুলে ব্যবসা

চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহরে কালনাগিনী পাহাড়ের পাদদেশে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে বেশ কয়েকটি পরিবার। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ধসে পড়ে পাহাড়ের কিছু অংশ। গতকাল দুপুরে।  ছবি: সৌরভ দাশ
চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহরে কালনাগিনী পাহাড়ের পাদদেশে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে বেশ কয়েকটি পরিবার। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ধসে পড়ে পাহাড়ের কিছু অংশ। গতকাল দুপুরে। ছবি: সৌরভ দাশ
>
  • শতাধিক এক কক্ষবিশিষ্ট ঘর রয়েছে, যার অর্ধেকই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সবই অবৈধ।
  • পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় কালনাগিনী পাহাড়টির নাম নেই।
  • গত বৃহস্পতিবার পাহাড়ের ছোট একটি অংশ ভেঙে পড়ে।
  • অভিযুক্ত দুই নেতা বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

চট্টগ্রামে রেলওয়ের পাহাড় ও সংলগ্ন জায়গায় অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঘর তৈরি করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই যুবলীগ নেতাসহ কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। নগরের ষোলশহর রেলস্টেশনের পেছনে কালনাগিনী পাহাড় কেটে প্রায় ১০ বছর ধরে এই বসতি গড়ে তোলা হয়। সম্প্রতি নতুন করে আরও ঘর তোলা হচ্ছে সেখানে।

এই দুই নেতা হলেন শুলক বহর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবুল বশর ও ‘উপসম্পাদক’ কবির আহমদ। কবির আহমদ ঠিকাদারি করেন। তিনি ‘গ্যাস কবির’ নামেও পরিচিত। এ ছাড়া সেখানে আবু বক্কর ও ‘দুলাভাই’ নামে দুজনের ঘর রয়েছে। তবে এই দুজনের বিষয়ে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সব মিলে সেখানে শতাধিক এক কক্ষবিশিষ্ট ঘর রয়েছে, যার অর্ধেকই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সবই অবৈধ।

জেলা প্রশাসন পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও এখানকার বাসিন্দারা তা কানে তোলে না। এমনকি পাহাড়টি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায়ও নেই। অথচ গত সপ্তাহে বৃষ্টিতে কালনাগিনী পাহাড়ের এক পাশের ছোট একটি অংশ ভেঙে পড়ে বলে ভাড়াটেরা জানান।

রওশন আলী নামের এক বাসিন্দা বলেন, আড়াই হাজার টাকা ভাড়ায় প্রায় ছয় বছর ধরে তিনি এখানে বসবাস করছেন। গত সপ্তাহে পাহাড়ের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। তবে তাতে ক্ষতি হয়নি।

সরেজমিন

ষোলশহর রেলস্টেশনের পেছনে কালনাগিনী পাহাড়ের অবস্থান। পাহাড়টি কাটা হয়েছে খাড়াভাবে। এর পাদদেশে সারিবদ্ধভাবে তোলা হয়েছে ঘর। টিনের তৈরি এসব ঘরের মেঝে পাকা। ঘর ও পাহাড়ের দূরত্ব দুই ফুটের মতো। পাহাড় যাতে ভেঙে না পড়ে, সে জন্য খুঁটি পুঁতে বালুর বস্তা দিয়ে উঁচু করা হয়েছে। একটা লোহার সিঁড়ি রয়েছে পাহাড়ের সঙ্গে। ওই সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে বালুর বস্তার ওপর টানানো রশিতে কাপড় শুকাতে দেয় বাসিন্দারা।

৮-১০টি মাটির চুলার একটি রান্নাঘর করা হয়েছে এক পাশে। ওই রান্নাঘরে সব বাসিন্দা পালা করে রান্না করেন। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় লাকড়ি।