দুই শিক্ষার্থীকে পিষে মারার ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থীকে বাসচাপা দিয়ে পিষে মারার ঘটনার প্রতিবাদে মিরপুর ১-এ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। তারা পুলিশের লাঠিপেটারও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। মিরপুর ১, ঢাকা, ৩১ জুলাই। ছবি: ইফতেখার মাহমুদ
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থীকে বাসচাপা দিয়ে পিষে মারার ঘটনার প্রতিবাদে মিরপুর ১-এ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। তারা পুলিশের লাঠিপেটারও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। মিরপুর ১, ঢাকা, ৩১ জুলাই। ছবি: ইফতেখার মাহমুদ

বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থীকে পিষে মারার ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নিয়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো ঢাকা প্রায় স্থবির।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে কমার্স কলেজসহ আশপাশের বেশ কিছু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বরের রাস্তায় অবস্থান নেয়। সাড়ে ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা ওই পথে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিছু বাস যেতে চাইলে শিক্ষার্থীদের তাড়ার মুখে গতিপথ পরিবর্তন করেন চালকেরা। তবে স্কুলগামী বাস ও শিক্ষার্থী বহনকারী প্রাইভেট কারগুলোকে যেতে দেওয়া হয়।

এ সময় মিরপুর-১, ২, ১০ নম্বর গোল চত্বর, কাজীপাড়া ও ১১ নম্বর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে পুরো এলাকা স্থবির। এসব এলাকায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই মরল কেন, সরকার জবাব চাই’, ‘আমার বোন মরল কেন, সরকার জবাব চাই’—এমন বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছে। ৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী পুরো এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিরপুর এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে আরও শিক্ষার্থী এসে এই বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরো এলাকাজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। অনেক অভিভাবককে শিশুকে স্কুলে না দিয়ে বাসায় ফিরে যেতে দেখা গেছে। আশপাশের দোকানপাট সব বন্ধ। পুরো এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ও থমথম পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

অন্যদিকে, শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ৬০ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থী মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর হোটেল র‍্যাডিসনের সামনে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।

এরপর ফার্মগেটে বাবুল টাওয়ারের সামনে স্থানীয় কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল আলম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, মিরপুর কালশী রোড থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় মোড়ে মোড়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। মোহাম্মদপুর থেকে মিরপুর হয়ে উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, টঙ্গী ও গাবতলী থেকে গুলশান নতুন বাজার পর্যন্ত রোডে বাস সার্ভিস বন্ধ। মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর যাত্রীকে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে আবদুল্লাহপুর থেকে মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী জাবালে নূর পরিবহন লিমিটেডের একটি বাস সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ও একই কলেজের ছাত্রী দিয়া খানম নিহত হন। গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।