'আশুলিয়ায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা'

ঢাকার আশুলিয়ায় এক পোশাককর্মীর বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ভাদাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন ওই বখাটেকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

হামলার শিকার মেয়েটির নাম লাবণী আক্তার (১৪)। সে পরিবারের সঙ্গে থেকে স্থানীয় পিয়ার আলী উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। অভিযুক্ত যুবকের নাম আবদুর রাজ্জাক।

আশুলিয়া থানার পুলিশ ও স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে রাজ্জাক আশুলিয়ার বিভিন্ন পোশাক কারখানায় চাকরি করছেন। মাস খানেক আগে তিনি লাবণীদের বাসার পাশে একটি কক্ষ ভাড়া নেন। মঙ্গলবার স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়া পথে রাজ্জাক লাবণীর পিছু নেন। একপর্যায়ে লাবণীদের বাসায় ঢুকে তাকে কোপাতে থাকেন। এ সময় তার চিৎকারে পাশের কক্ষে থাকা লাবণীর মামা ও প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজ্জাককে আটক করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

আশঙ্কাজন অবস্থায় লাবণীকে প্রথমে সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক সাবিতুন্নাহার বলেন, লাবণীর মাথায় চারটি কোপ লেগেছে। এ ছাড়া তাঁর জিবের এক-তৃতীয়াংশ কেটে গেছে। ডান হাতেও সে আঘাত পেয়েছে।

লাবণীর বরাত দিয়ে সাবিতুন্নাহার আরও বলেন, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে রাজ্জাক চার দিন ধরে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে টিফিনের ছুটিতে সে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর রাজ্জাক তার পিছু নেন। লাবণী ভয়ে দ্রুত বাসায় গিয়ে নিজেদের কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় বাসায় আর কেউ ছিলেন না। এই সুযোগে রাজ্জাক তার পিছু পিছু গিয়ে ওই কক্ষে ঢোকেন। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই কক্ষে থাকা একটি দা দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন।

লাবণীর মামা ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা যে বাড়িতে ভাড়া থাকেন, সিটি একটি বড় বাড়ি। এর একেকটি কক্ষে একেকটি পরিবারের বসবাস। একটি কক্ষে তাঁর বোন ও ভগ্নিপতি থাকেন। পাশের কক্ষে থাকেন তিনি। এর পরের কক্ষটিই রাজ্জাকের। মাস খানেক হয় তিনি (রাজ্জাক) ওই কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন।

ইমরান হোসেন বলেন, রাজ্জাক কয়েক দিন ধরে লাবণীকে যে উত্ত্যক্ত করছিলেন, তা তাঁদের জানা ছিল না। মঙ্গলবারের ঘটনার পর তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন।

লাবণীর বাবা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘হত্যার উদ্দেশ্যে রাজ্জাক ঘরে ঢুকে আমার মেয়েকে কোপাচ্ছিলেন। আমার শ্যালকসহ স্থানীয় লোকজন এগিয়ে না এলে তাকে বাঁচানো যেত না।’

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আউয়াল বলেন, ‘জনতা পিটুনি দিয়ে রাজ্জাককে পুলিশে সোপর্দ করেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’