বাস চলাচলে বিরোধ, অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে সব বাসের কাউন্টার। সকাল আটটা, বাস টার্মিনাল, চুয়াডাঙ্গা, ২ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে সব বাসের কাউন্টার। সকাল আটটা, বাস টার্মিনাল, চুয়াডাঙ্গা, ২ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের যাত্রীবাহী বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এ কারণে চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ পথে কোনো যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। এমনকি জেলার ওপর দিয়ে অন্য জেলার কোনো বাস চলতে দেওয়া হচ্ছে না।

মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত রয়েল এক্সপ্রেসের নতুন বাস চলাচলকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহের সঙ্গে বিরোধ ও কাউন্টার বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। তবে ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা থেকে ১৩টি পথে বাস চলাচল করে। সেগুলো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, যশোর, বরিশাল, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী ।

আন্তজেলা বাসটার্মিনালে কথা হয় ঢাকাগামী যাত্রী একরামুল হকের সঙ্গে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। জরুরি প্রয়োজনে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। বলেন, ঢাকাগামী বাস না থাকায় অটোরিকশায় ঝিনাইদহে গিয়ে বাসে উঠতে হবে।

দৌলাতদিয়াড় বিএডিসি গুদাম চত্বরে অলস অবস্থায় পড়ে আছে রয়েল এক্সপ্রেসের বাসগুলো। চুয়াডাঙ্গা, ২ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
দৌলাতদিয়াড় বিএডিসি গুদাম চত্বরে অলস অবস্থায় পড়ে আছে রয়েল এক্সপ্রেসের বাসগুলো। চুয়াডাঙ্গা, ২ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এ নাসির জোয়ার্দ্দার জানান, সংগঠনের সভাপতি রয়েল এক্সপ্রেসের মালিক মো. সালাউদ্দিন মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে পটুয়াখালী পথে চলাচলকারী যাত্রীদের জন্য অত্যাধুনিক দুটি যাত্রীবাহী বাস চালানোর উদ্যোগ নেন। মেহেরপুর থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত প্রতিটি জেলার পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অন্যান্য জেলায় সমস্যা না হলেও ঝিনাইদহের পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে হয়রানি করছেন। তাঁরা পটুয়াখালী পথে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি গত সোমবার রাতে ঢাকাগামী রয়েল এক্সপ্রেসের সব বাস ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গায় ফেরত পাঠান। এবং সেখানে রয়েল এক্সপ্রেসের টিকিট কাউন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম বলেন, ঢাকা ও পটুয়াখালী পথে রয়েল এক্সপ্রেস বাসের স্বাভাবিক চলাচলের সুযোগ এবং চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ পথে ৬০ ট্রিপের অর্ধেক হিসাবে ৩০টি ট্রিপ হিস্যা না পাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।

ঝিনাইদহ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু দাবি করেন, রয়েল এক্সপ্রেস চলাচলে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি এবং সোমবার রাতেও বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঝিনাইদহের মালিকেরা স্বাধীনতার পর থেকে ব্যবসা করছেন। রয়েল এক্সপ্রেসের নতুন বাস চলাচলে সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করতে বলেছিলাম। কিন্তু পরিবহনটির মালিক তা না করে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।’