জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর গত বৃহস্পতিবার থেকে সহিংস হামলা বাড়ে। ছবি: প্রথম আলো
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর গত বৃহস্পতিবার থেকে সহিংস হামলা বাড়ে। ছবি: প্রথম আলো

নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করা শিশু-কিশোর ও তরুণদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার উদ্বেগ বাড়ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বার্থে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা তরুণদের ওপর নৃশংস হামলা আর সহিংসতা যৌক্তিক প্রমাণ করা যায় না।

ঢাকায় জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং মার্কিন দূতাবাস গতকাল রোববার তাদের ফেসবুক পেজে পৃথক বিবৃতিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে এসব মন্তব্য করেছে।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংস হামলা বেড়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বিবৃতিতে বলেছে, সড়কের নিরাপত্তাসহ যেসব বিষয়ে উদ্বেগ আছে, তা নিয়ে কোনো রকম সহিংসতার হুমকি ছাড়াই শিক্ষার্থী এবং তরুণদের নিজেদের মত প্রকাশের আইনসংগত অধিকার রয়েছে। বিশ্বজুড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে জাতিসংঘ দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে তরুণদের প্রধান হন্তারক (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশে ২০ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়)।

জাতিসংঘ বলেছে, গত কয়েক দিনে রাজধানীতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণদের আহত হওয়াটা গভীর উদ্বেগের। বিক্ষোভের কারণে অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা।

ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘আমরা সহিংসতার খবরে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে তরুণদের উদ্বেগটা আইনসম্মত এবং ঢাকার মতো মেগাসিটিতে এর সমাধান প্রয়োজন। একটি কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থায় শিশু, কিশোরী, নারীসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।’

জরুরি ভিত্তিতে শিশু, তরুণসহ সবাইকে রাজপথে এবং সব ধরনের সহিংসতা থেকে নিরাপদ রাখতে জাতিসংঘ সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উন্নত যানবাহন আর নিরাপদ সড়কের দাবিতে বাংলাদেশজুড়ে শিক্ষার্থী আর স্কুলের শিশুদের নেতৃত্বে গত সপ্তাহের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এটি সারা দেশের মানুষের নজর কেড়েছে। কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে বিভিন্ন যানবাহন ও সম্পত্তি ধ্বংসের বিষয়টিকে যেমন ক্ষমা করা যায় না, তেমনি নিরাপদ বাংলাদেশের স্বার্থে হাজার হাজার তরুণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নৃশংস হামলা আর সহিংসতাকে কোনোভাবে যৌক্তিক বলা যায় না।