৪৩ লাখ টাকা করে পেল ৭ নিহতের পরিবার

নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার ৫ মাস পর নিহত ও আহত যাত্রীদের বিমা দাবির ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হয়েছে। আজ নিহত ৭ যাত্রীর পরিবারের সদস্যরা ও আহত যাত্রী এ বাবদ মোট ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বুঝে পেয়েছেন। এর মধ্যে একেকজন নিহত যাত্রীর পরিবারের সদস্যরা পেয়েছেন ৪৩ লাখ টাকা। আর আহত যাত্রী পেয়েছেন ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। নিহত অন্য যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ উত্তরাধিকার সনদ পাওয়ার পর দ্রুত পরিশোধ করা হবে।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের বিমাকারী প্রতিষ্ঠান সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্স আজ সোমবার এসব তথ্য জানিয়েছে। এ দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত যাত্রীদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দিতে ঢাকার মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটওয়ারী, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন। লিখিত বক্তব্য দেন সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শফিক শামীম।

গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৬৭ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের ড্যাশ এইট কিউট ৪০০ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় ২৭ জন বাংলাদেশি, ২৩ জন নেপালি, ১ জন চীনাসহ মোট ৫১ জন নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় আহত লোকজনের মধ্যে ৯ জন বাংলাদেশের, ১০ জন নেপালের ও ১ জন মালদ্বীপের নাগরিক।

দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রী ফয়সাল আহমেদের পক্ষে ক্ষতিপূরণের চেক নেন সামসুদ্দিন সরদার ও শামসুননাহার। নিহত এস এম মাহমুদুর রহমানের পক্ষে পরিবারের তিনজন, মতিউর রহমানের পক্ষে ছয়জন, নুরুজ্জামান বাবুর পক্ষে তিনজন, পৃথুলা রশিদের পক্ষে দুজন, এফ এইচ রশিদের পক্ষে তিনজন এবং কে এইচ এম শাফির পক্ষে পরিবারের তিনজন সদস্য ক্ষতিপূরণের চেক বুঝে নেন। আহত যাত্রী শেখ রাশেদ রুবায়েত নিজে উপস্থিত থেকে চেক গ্রহণ করেন। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেয়েছেন ৪২ হাজার ৭৩০ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা হিসাবে)।

নিহত যাত্রীদের প্রত্যেকের পরিবার পেয়েছেন ৫১ হাজার ২০০ ডলার বা ৪৩ লাখ টাকা। এ অর্থ একজন ব্যক্তির উত্তরাধিকার সংখ্যা অনুপাতে সমানভাবে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। নিহত ও আহত ৭১ জন যাত্রীর জন্য মোট ৪০ কোটি টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করেছে সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্স।

সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্সের সিইও শফিক শামীম বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারদের বিমার অর্থ দিতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি, বাংলাদেশ ও নেপালের আইন বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ অনুসারে প্রত্যেক নিহত যাত্রীর ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছে।

ওয়ারশ কনভেনশন অনুযায়ী প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির পরিবার ৫০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। এ জন্য সাকসেশন সার্টিফিকেট বা উত্তরাধিকার সনদ জমা দিতে হয়েছে। একজন ব্যক্তি কোনো দুর্ঘটনায় মারা গেলে তাঁর পক্ষে পরিবারের কে ক্ষতিপূরণ পাবেন, সে জন্য আদালত থেকে একটি সনদ নিতে হয়। একেই বলে সাকসেশন সার্টিফিকেট। এ ছাড়া লাগেজ বাবদ আরও ১ হাজার ২০০ ডলার সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।