'পড়ে গিয়ে আহত প্রবীণদের এক-তৃতীয়াংশ মারা যান'

ঢাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন জেরিয়াট্রিক অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় সম্মেলন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়াও বক্তব্য দেন। ঢাকা ক্লাব, ১১ আগস্ট। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
ঢাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন জেরিয়াট্রিক অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় সম্মেলন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়াও বক্তব্য দেন। ঢাকা ক্লাব, ১১ আগস্ট। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

প্রবীণদের এক-পঞ্চমাংশ মেঝেতে, সিঁড়িতে, বাথরুমে বা রাস্তায় পড়ে মারাত্মক আহত হন। আহত ব্যক্তিদের এক-তৃতীয়াংশ মারা যান। হাড় ভাঙলে চিকিৎসকদের উচিত বিলম্ব না করে প্রবীণদের শরীরে অস্ত্রোপচার করা। রাষ্ট্রের উচিত ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবায় এখন থেকেই জোর প্রস্তুতি নেওয়া।

শনিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত জেরিয়াট্রিক অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এ কথা বলেন। দিনব্যাপী এই সম্মেলনে শতাধিক প্রবীণ অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন।

ভারতের পশুবতি সিংহানিয়া গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকাশ সিংয়েধর তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীর ও মনে পরিবর্তন আসে। বয়স্ক মানুষ একাকিত্ব বোধ করেন। তাঁদের সঙ্গীর অভাব হয়। তাঁদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য দেখা দেয়। তিনি বলেন, প্রবীণদের চিকিৎসা-ব্যয় কম হতে হবে। খরচ বেশি হলে কেউ চিকিৎসা নেবেন না, সে চিকিৎসা যত ভালো বা আধুনিক হোক না কেন।

দেশের বিশিষ্ট শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক আর আর কৈরি বলেন, প্রবীণেরা সামাজিক বৈষম্যের শিকার হন, এটা শোনা যায়। কিন্তু তাঁরা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেও বৈষম্যের শিকার হন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। এটা ভালো খবর হলেও কিছু সংকটও দেখা দিয়েছে। দেশে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এসব মানুষের জন্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষিত জনবল দরকার।

একাধিক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের পর দুপুরে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের পদ্মশ্রী উপাধি পাওয়া প্রখ্যাত শল্যচিকিৎসক জন এবনেজার বলেন, ‘চিকিৎসকদের অভ্যাস হচ্ছে শিশু-কিশোর, বয়স্ক ও প্রবীণদের একই ধাঁচে শল্যচিকিৎসা দেওয়ার। কিন্তু প্রবীণদের চিকিৎসায় আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন দরকার। প্রবীণেরা সমাজের সম্পদ, তাঁরা বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। মনে রাখতে হবে, আমাদের প্রত্যেক পরিবারে প্রবীণ আছেন।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক নকুল কুমার দত্ত। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, এই সম্মেলন থেকে দেশের নবীন চিকিৎসকদের অনেক কিছু শেখার সুযোগ আছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল গনি মোল্লা, জেরিয়াট্রিক অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মনিরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।