মালিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার চালক-সহকারী

জিয়ন মণ্ডল
জিয়ন মণ্ডল
>
  • বাসচালক ইনসানের হালকা যান চালানোর লাইসেন্স ছিল
  • সেই লাইসেন্স নিয়ে তিনি ভারী যান চালাচ্ছিলেন
  • বাসের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলছে পুলিশ

রংপুরে স্কুলছাত্র তানভীর আহমেদ জিয়ন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসের চালক ইনসান আলী (৩৮) ও তাঁর সহকারী বাদশা মিয়াকে (৩৫) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বাসের মালিকের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। নগরের দর্শনা এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে গতকাল রোববার বাসচাপায় নিহত হয় ১৬ বছরের জিয়ন।

কোতোয়ালি থানার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে চালক ইনসান ও সহকারী বাদশাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান। রংপুর শহরের মেডিকেল মোড় এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ভাইবোন পরিবহন নামের বাসটিও জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, বাসটির চালক ইনসানের হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স ছিল। এই হালকা যানবাহনের লাইসেন্স নিয়ে তিনি ভারী যানবাহন চালাচ্ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি তা পারেন না। এ কারণে বাসের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জিয়নকে চাপা দেওয়া বাসটির মালিক শরিফা বেগম। তাঁর বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার গোলপাড়া এলাকায়। আটক চালক ইনসানের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার তাহেরপুরে। বাদশার বাড়ি পলাশবাড়ী উপজেলায়।

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুক্তারুল আলমের ভাষ্য, গতকাল রাতে বাসের চালক, সহকারী ও মালিকের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চালক ও সহকারী থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

জিয়ন রংপুর শহরের কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা জাহিদুল ইসলাম বদরগঞ্জের লোহানীপাড়া ইউনিয়নের মণ্ডলের হাট গ্রামের লোহানীপাড়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

দেশব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ চলার মধ্যেই গতকাল বেপরোয়া বাসচাপায় প্রাণ হারাল জিয়ন। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত আরও পাঁচ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজনের প্রাণহানি হয়েছে। এই সময়ে ঢাকার গুলিস্তানে একজন, যশোরে পিকআপ-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক কলেজছাত্র, জামালপুরে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় শিশু ও খুলনায় ট্রাকচাপায় একজন ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। গত ৫৩৬ দিনে এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়কে প্রাণ গেছে ৪ হাজার ৮০১ জনের।

বাসচাপায় জিয়ন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে জনতা। বেলা আড়াইটার দিকে সড়ক থেকে অবরোধকারী শিক্ষার্থী ও জনতাকে সরাতে পুলিশ বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় দুই পক্ষে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের কয়েকটি শেল ও ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়লে সড়ক থেকে সরে যায় তারা। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।