ধর্ষকেরা মা তো মা, শিশুটিকেও ছাড়ল না!

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার একটি গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয়ে এক শিশুর (১১) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশুটি ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পুলিশ বলছে, কী কারণে শিশুটি মারা গেছে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। একই ঘটনায় শিশুটির মাও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শিশুটির চাচা বলছেন, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে মুখোশপরা চারজন দুর্বৃত্ত তাঁর ভাইয়ের ঘরে অতর্কিতে হানা দিয়ে এমন পাশবিক কাণ্ড ঘটায়। ঘটনার সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য ছিল না। দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার পর তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা ছুটে আসেন। শিশুটিকে ওই বাড়ির দোতলায় বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। তার চেতনা ছিল না, শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজন তাকে কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শিশুটির চাচা বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যাই। ভাইয়ের স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বিস্তারিত বলেন।’

এলাকাবাসীর তথ্যমতে, দুর্বৃত্তরা সংখ্যায় চারজন ছিল। মুখোশ পরে তারা বাড়িতে ঢোকে। দুর্বৃত্তরা মা-মেয়ে দুজনকেই ধর্ষণ করে। ধর্ষণের কারণে হয়তো শিশুটি মারা গেছে।

শিশুটির ফুপুর ভাষ্য, ‘দুর্বৃত্তরা যখন ঘরে ঢোকে, তখন আমার ভাইয়ের বউ ঘুমাচ্ছিলেন। পাশে ছোট বাচ্চা দুটোও ঘুমাচ্ছিল। বাচ্চা দুটোর মুখে টেপ লাগায় ওরা। এরপর মা ও মেয়ের ওপর অত্যাচার চালায়। আমরা এর বিচার চাই।’

কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বলেন, শিশুটি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যায়। তবে শরীরে ক্ষতের চিহ্ন দেখা গেছে। শিশুটি কী কারণে মারা গেছে, তা ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন না দেখে বলা যাবে না।

ওই গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য বলেন, ‘আমি হাসপাতালে গিয়ে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় দেখেছি। তখনো তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।’

শিশুটির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুস ছালাম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিতে আসতে হবে। আমরা এ নির্মমতার উপযুক্ত বিচার চাই।’

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। ধর্ষণের শিকার হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে। কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্ত করা যায়নি বলে তিনি জানান।