২০ হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়ছে আজ

ঈদুল আজহা উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। গাবতলী বাস টার্মিনাল, ঢাকা, ১৭ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো
ঈদুল আজহা উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। গাবতলী বাস টার্মিনাল, ঢাকা, ১৭ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো

ঈদযাত্রার প্রথম দিন আজ শুক্রবার। গত মঙ্গলবার থেকে অবশ্য ঘরমুখী মানুষ ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে। ছুটিছাটার হিসাব মিলিয়ে গত তিন দিনের তুলনায় আজ সকাল থেকে যাত্রীদের ভিড় যেন একটু বেশিই। সকাল থেকে বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। 

পরিবহন সূত্র বলছে, আজ ২০ হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়তে যাচ্ছে।

রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর ও গাবতলীর বিভিন্ন বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে বাসের অপেক্ষা করছেন অনেকে। কেউ কেউ করছেন টিকিটের খোঁজ। উত্তরবঙ্গে বাস চলাচলে এবার তেমন ঝক্কি নেই। সময়মতো বাস আসছে। দক্ষিণবঙ্গের বাসগুলোকে ফেরিঘাটে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশরাত তাসনিমের বাস ছাড়বে সকাল ১০টায়। ঘণ্টাখানেক আগে, সকাল ৯টায় এসে তিনি শ্যামলীতে শাহ ফতেহ আলী বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করছেন। যাবেন নাটোর। টিকিট কেটেছেন লাইনে দাঁড়িয়ে। ভিড় থাকলেও বাস সময়মতো ছাড়বে শুনেই খুশি।

বাস কাউন্টারগুলোতে ঘুরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে। গাবতলী বাস টার্মিনাল, ঢাকা, ১৭ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো
বাস কাউন্টারগুলোতে ঘুরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে। গাবতলী বাস টার্মিনাল, ঢাকা, ১৭ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো

শ্যামলী থেকে কল্যাণপুরে প্রায় সব বাস কাউন্টারের সামনে বাড়তি চেয়ার দিয়ে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকাল থেকে আজ রোদের আঁচ বেশি। গরমে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। দরদর করে ঘামছিলেন রুকন উদ্দিন। ছুটি পেয়েছেন শুধু ঈদের তিন দিনই। তাই নিজে যাবেন পরে। পরিবারের বাকি সদস্যদের আগেই পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি কল্যাণপুরে কুষ্টিয়াগামী পরিবহন এসবি সুপার ডিলাক্সের কাউন্টারে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘বাস আসতে নাকি দেরি হবে। শুনলাম, ঘাটে ফেরি ছাড়তে দেরি করছে।’

টিকিট পাওয়া, যানজট, গরম—সব মিলিয়ে নানা ঝক্কি ও কষ্ট থাকলেও ঈদে বাড়ি যাওয়া নিয়ে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। শাহীন খান নামের এক যাত্রী জানান, ঈদের ছুটির সঙ্গে রবি ও সোমবার বাড়তি ছুটি মিলিয়ে বেশ লম্বা ছুটিই পেয়েছেন। সঙ্গে চার বছরের ছেলেকে দেখিয়ে বললেন, ‘নিজ হাতে গরুকে সে কিছুদিন খাওয়াবে, তাই কখন পৌঁছাবে, বারবার জানতে চাইছে। রোজার ঈদে যেতে পারিনি। কিন্তু কোরবানির ঈদ বাড়িতে না করলে হয় না।’

এর মধ্যেও অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করলেন। নাজমা বেগম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর এই ঈদে বাড়ি যাওয়া নিয়ে যে কত কষ্ট পোহাতে হয়! টিকিট পাই অনেক ঝামেলা করে। তাও অনেক দাম। যানজট থাকলে তো কষ্টের সীমা থাকে না।’
অনেক ঘরমুখী মানুষকে আজ কাউন্টারে এসে টিকিটের খোঁজ করতে দেখা গেছে। তাৎক্ষণিক টিকিটও পেয়েছেন তাঁরা। তবে মূল্যটা বেশ চড়াই দিতে হয়েছে।

শ্যামলী পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক জীবন চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরবঙ্গে এবার তেমন কষ্ট নেই। শুধু বঙ্গবন্ধু সেতুর পরে বগুড়া পর্যন্ত সড়ক খারাপ হওয়ায় ওই অংশে বাস ধীরগতিতে চলছে। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গে ঘাটে প্রচণ্ড জট। স্রোত ও নাব্যতা-সংকটে ফেরি চলাচলের সমস্যা হওয়ায় এ দুর্ভোগ। এ ছাড়া আমিন বাজারে গরুর হাট বসায় দু-তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে ঢাকায় ঢুকতে।’ তাঁর মতে, আজ বিভিন্ন পরিবহন মিলিয়ে অন্তত ২০ হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়বে।