ধমক দিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে পারবেন না

রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অনাচার ও অপকর্ম দিয়ে ১/১১-এর পুনরাবৃত্তির পথ প্রশস্ত করছেন।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সরকার প্রতিবাদী মানুষের ‘টর্নেডোতে’ ভয় পেয়ে ‘বেসামাল’ হয়ে পড়েছে। চারদিকে সরকারের পতনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

আজ শনিবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। গত সপ্তাহে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘বিএনপি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত করছে।’ এর জবাবে আজ ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নানা রকম দুঃস্বপ্নে অস্থির ও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মানুষের বাক্‌স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হরণ করে যে শূন্যতার সৃষ্টি করেছেন, তাতে ধেয়ে আসা প্রতিবাদী মানুষের টর্নেডোতে ভয় পেয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছেন। তাই কখনো ভয়ের কথা বলছেন, কখনো ধমকের সুরে কথা বলছেন।’

রিজভী আরও বলেন, যারা নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়, তারা আগ্রাসী শক্তি। যারা শিশু-কিশোরদের রক্ত নিংড়ে নেয় ও প্রতারণা করে, তারা মনুষত্বহীন। তিনি বলেন, ‘কাদের সাহেব, ধমক দিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে পারবেন না। চারদিকে আপনাদের পতনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে নোয়াখালীর মানিকনগরে নিজ বাড়িতে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবরা নিজেরাই নিজেদের অনাচার ও অপকর্মের দ্বারা ১/১১-এর পুনরাবৃত্তির পথ প্রশস্ত করছেন।’

সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শিশু-কিশোরেরা রাস্তায় নেমেছিল নিরাপদ সড়কের দাবিতে। এ আন্দোলনের সমর্থনকারীদের বলা হচ্ছে ‘উসকানিদাতা’। অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, ফেসবুক ব্যবহারকারী, রাজনৈতিক দল—যারা এই আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের হিড়িক চলছে। রিমান্ডে নিয়ে শেখানো বুলি স্বীকার করতে উৎপীড়ন করা হচ্ছে। এ আন্দোলনে সমর্থনকারী আলোকচিত্রী, অভিনেত্রী, শিল্পী, কলাকুশলী, লেখক, সাংবাদিক, অভিভাবক—কেউ সরকারের নিপীড়ন থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াসহ বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা আজ আক্রোশের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় কারাগারে। দেশের হাজার হাজার নেতা-কর্মী মামলা-হামলায় বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত। মিথ্যা মামলায় আসামি করাসহ নিজ গৃহে অবরুদ্ধ করা হচ্ছে জ্যেষ্ঠ নেতাদের। অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ঈদের আগে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

রিজভী অভিযোগ করেন, এস এম সাগর নামের একজন ছাত্রদল কর্মীকে ১২ আগস্ট দিবাগত রাত তিনটায় সাভারের আশুলিয়ার বাসা থেকে ১০ থেকে ১২ জন সাদাপোশাকের লোক তুলে নিয়ে গেছে। ছয় দিন ধরে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।