সান্তাহারে বিদ্যুতের লো ভোল্টেজ নিয়ে ভোগান্তিতে গ্রাহকেরা

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় সান্তাহার বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে গ্রাহকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। লো ভোল্টেজের কারণে কলকারখানার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আবাসিক গ্রাহকদের বাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম একের পর এক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুতের এমন লো ভোল্টেজ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকেরা।

সান্তাহার বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার বিদ্যুৎকেন্দ্রের আওতায় বাণিজ্যিক, আবাসিক, সেচ পাম্প, ক্ষুদ্র শিল্প ও ভারী শিল্প মিলে মোট ৩৫ হাজার ৭৬৩টি সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক ৩০ হাজার ৫১৪, বাণিজ্যিক ৩ হাজার ৭৮৬, সেচ পাম্প ৭০৫, ক্ষুদ্র শিল্প ৭১৪ এবং ভারী শিল্পের ৪৪ জন গ্রাহক রয়েছেন। লো ভোল্টেজের কারণে সব শ্রেণির গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বয়ংক্রিয় চালকলের মালিকেরা।

সান্তাহার শহরের আরিফ স্বয়ংক্রিয় চালকলের মালিক রেজাউল ইসলাম বলেন, শহরে এক ডজনেরও বেশি স্বয়ংক্রিয় চালকল রয়েছে। দিনে এসব চালকল কোনো রকমে চললেও রাতের বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকছে। এতে করে চালকলের মালিকেরা ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, লো ভোল্টেজের কারণে এ পর্যন্ত তাঁর চালকলের পাঁচটি মোটর পুড়ে গেছে।

সান্তাহার শহরের লেদ মেশিন ব্যবসায়ী তমিজ উদ্দীন বলেন, বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ না থাকায় তাঁর কারখানার মেশিন বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

গত ১৫ দিনে বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু ফ্রিজ ও টেলিভিশন লো ভোল্টেজের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার দমদমা গ্রামের বাসিন্দা আঙুর বেগম জানান, মাত্র ছয় মাস আগে অনেক কষ্ট করে একটি ফ্রিজ কিনেছিলেন। লো ভোল্টেজের কারণে সেটি নষ্ট হয়ে গেছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, কয়েক দিন আগে লো ভোল্টেজের কারণে তাঁর গভীর নলকূপের মিটার পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, ভোল্টেজ কম থাকায় সেচ পাম্প চলছে না, এ কারণে জমিতে সেচ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

লো ভোল্টেজের সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে সান্তাহার বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন, বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, দিনে কিছুটা ভোল্টেজ থাকলেও রাতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভোল্টেজ একেবারে কমে যায়। একই সঙ্গে মূল সরবরাহ লাইনে কিছুটা ত্রুটি থাকায় ভোল্টেজ সমস্যা হচ্ছে। তাঁর মতে, বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে সমস্যা অনেকটা কমে আসবে।