গরুকে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়ায় চারজন কারাগারে

সিরিঞ্জ ও ইনজেকশন জব্দ করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
সিরিঞ্জ ও ইনজেকশন জব্দ করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বেশ হৃষ্টপুষ্টই ছিল গরুগুলো। দারদামও ভালো উঠছিল। তবুও আরও লাভের আশা মো. আলম (৪৬) ও রুবেল (৩২) নামের গরুর দুই ব্যাপারীর। কিন্তু তাঁরা ঘাস, ভুসি খাইয়ে নয়, ক্ষতিকর ইনজেকশন দিয়ে খুব দ্রুত গরুগুলো ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে মোটা করেন। ইনজেকশন দেওয়ার কাজটি করছিলেন তরিকুল ইসলাম (৩৫) ও হেকমত আলী (৫৬) নামের দুই হাতুড়ে ডাক্তার। তবে গরুর শরীরের স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়ার অপরাধে ধরা পড়েন তাঁরা। যেতে হলো কারাগারে।

গাবতলীর কোরবানির পশুর হাটে আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। রাজধানীর সবচেয়ে বড় এই পশুর হাটে দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় অভিযান চালান র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ১২ জন চিকিৎসক হাটের কোরবানির বেশ কিছু পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, রুবেলের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলায়। আর আলমের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলায়। এই দুই ব্যাপারীর মধ্যে আলম চারটি ও রুবেল ছয়টি গরু ঢাকায় আনেন। আলমের প্রতিটি গরুর দাম ছিল চার লাখ টাকা। অন্যদিকে রুবেলের গরুগুলো দাম চাওয়া হচ্ছিল ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা। তবে আকর্ষণ বাড়িয়ে বেশি লাভের আশায় গাবতলীর পশুর হাটে থাকা হাতুড়ে ডাক্তার তরিকুল ও হেকমত আলীকে দিয়ে আজ দুপুরে দুটি গরুর শরীরে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়ান আলম ও রুবেল। অভিযানে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় এটি ধরা পড়ে।

গরুকে ইনজেকশন দেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
গরুকে ইনজেকশন দেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

সারওয়ার আলম বলেন, দুটি গরুকে দুর্বল দেখালে সন্দেহ দেখা দেয়। পরীক্ষা করে বের হয় দুটি গরু বেশ ফোলা ছিল। শরীরও বেশ নরম ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে দুটি গরুকে ইনজেকশন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন রুবেল ও আলম। তাঁদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে হাট থেকে তরিকুল ও হেকমতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অপরাধ স্বীকার করায় তরিকুল ও হেকমতকে এক বছর করে এবং দুই গরু ব্যবসায়ীকে দুই মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদের কাছ থেকে প্রচুর ওষুধ জব্দ করা হয়। এ ছাড়া স্টেরয়েড দেওয়া দুটি গরু জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা করানোর জন্য কুষ্টিয়া ও নওগাঁয় ফেরত পাঠানো হয়েছে।