নারায়ণগঞ্জে কেরোসিন ঢেলে যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

নিহত সুমনের স্বজনদের আহাজারি। তাঁদের অভিযোগ, পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁকে আগুনে পোড়ানো হয়েছে। পশ্চিম মাসদাইর, নারায়ণগঞ্জ, ১ সেপ্টেম্বর। ছবি: দিনার মাহমুদ
নিহত সুমনের স্বজনদের আহাজারি। তাঁদের অভিযোগ, পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁকে আগুনে পোড়ানো হয়েছে। পশ্চিম মাসদাইর, নারায়ণগঞ্জ, ১ সেপ্টেম্বর। ছবি: দিনার মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ নগরীর পশ্চিম মাসদাইর এলাকায় এক যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মো. সুমন (৩৫) নামের ওই যুবক আজ ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। গতকাল শুক্রবার রাতে তিনি দগ্ধ হন।

পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে কয়েক ব্যক্তি সুমনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন বলে পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক।

সুমনের পরিবারের সদস্যদের দাবি, যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তাঁরা স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধেও মাদকসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

নিহত সুমনের বোন রীতা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক মাস আগে নগরীর পশ্চিম মাসদাইর এলাকার বিপ্লব ও সোহেল মণ্ডল সুমনের কাছ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ধার নেন। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করে তাঁরা টালবাহানা করতে থাকেন। চার থেকে পাঁচ দিন আগে আমার দাদিকে ওই টাকার জন্য পাঠানো হয়। তখন বিপ্লবেরা এক মাস সময় নেন।’

রীতা আক্তারের অভিযোগ, শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় বিপ্লব পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে মুঠোফোনে সুমনকে বাসা থেকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। বিপ্লবদের বাড়িতে সুমন যাওয়ার পর সেখানে বিপ্লবের স্ত্রী শায়লা আক্তার, সোহেল মণ্ডল ও মাসুদ ওরফে হোটেল মাসুদ মিলে সুমনকে জাপটে ধরেন। এরপর বিপ্লব সুমনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। রীতার ভাষ্য, মৃত্যুর আগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম সুমন বলে গেছেন। রীতা বলেন, ঘটনার পর সুমনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে প্রথমে তাঁকে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সুমনের আট বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী সোমা আক্তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলেও জানান রীতা। রীতার দাবি, তাঁর ভাই ঝুট ব্যবসা করতেন।

সুমনের মা কিসমত আরা বেগম বলেন, ‘বাসা থেকে যাওয়ার আগে সুমন ছেলেকে রুটি কিনে দিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলেছে, তাকে টাকা দেওয়ার জন্য বিপ্লব ডাকছে।’ তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসি চেয়েছেন।

এ ব্যাপারে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের প্রথম আলোকে বলেন, পাওনা টাকার বিরোধে আগুনে পুড়িয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এই ঘটনায় এখনো কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।

ওসি আরও বলেন, নিহত সুমনের বিরুদ্ধে মাদকের একটি মামলাসহ পাঁচটি মামলা আছে। আর অভিযুক্ত বিপ্লবের বিরুদ্ধে আছে মাদকের সাতটি মামলা।