কিশোরী সচেতনতায় অনন্য উদ্যোগ

বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নেন চার তরুণী। গতকাল বরিশালের সরকারি হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।  ছবি: প্রথম আলো
বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নেন চার তরুণী। গতকাল বরিশালের সরকারি হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

দুই স্কুটি চেপে চার তরুণী নগরের হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছেন। এমন দৃশ্য এই নগরে সচরাচর দেখা যায় না। মানুষের উৎসুক দৃষ্টি তাঁদের অনুসরণ করছে। পরে জানা গেল, শুধু বরিশাল নয়, সারা দেশ এভাবে চষে বেড়াচ্ছেন এই চার তরুণী।

তাঁদের উদ্দেশ্য সারা দেশ ঘুরে নারীর স্বাধীন সত্তার জানান দেওয়া। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কিশোরীদের যৌন হয়রানি থেকে আত্মরক্ষার কৌশল আর বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য পরিস্থিতির বিষয়ে সচেতন করছেন এই ভ্রমণকন্যারা।

চার তরুণীর এই কর্মসূচির নাম ‘নারীর চোখে বাংলাদেশ’। এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ-ভ্রমণকন্যা নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসক সাকিয়া হক। তাঁর সঙ্গীরা হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক মানসী সাহা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মাঝিকাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুন নাহার।

এর আগে চার ধাপে তাঁরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তরের ২১ জেলায় সচেতনতামূলক প্রচারণা শেষ করেন। পঞ্চম ধাপে গত ২৭ আগস্ট ঢাকা থেকে বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলে এসেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি জেলা ভ্রমণ করে গতকাল শনিবার এসে পৌঁছান বরিশালে।

গতকাল দুপুরে হালিমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির প্রায় দেড় শ কিশোরীকে নিয়ে সমাবেশ করেছেন তাঁরা। সেখানে তাঁরা যৌন হয়রানি থেকে আত্মরক্ষা, বয়ঃসন্ধিকালের সুরক্ষা ছাড়াও বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ এবং খাদ্য ও পুষ্টি, সড়ক নিরাপত্তা, বাল্যবিবাহ নিরোধের বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালান। উপস্থিত কিশোরীরা হাত উঁচিয়ে বাল্যবিবাহকে না বলে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ফকরুজ্জামান বলেন, ‘এ ধরনের সামাজিক উদ্যোগ আমাদের কিশোরীদের আরও সাহসী হতে সাহায্য করবে। এই উদ্যোগ সত্যি অনন্য।’

চার ভ্রমণকন্যা এরপর যাবেন মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলায়। সেখান থেকে ফিরবেন ঢাকায়।

দলের সমন্বয়ক সাকিয়া হক বলেন, ‘নিজেদের চিন্তা ও পরিকল্পনা থেকে আমরা এই উদ্যোগ নিই।’