অনুমতি ছাড়াই স্টেশনে সভামঞ্চ, বক্তব্য দিলেন কাদের

পাবনার ঈশ্বরদীর মুলাডুলি স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিনা অনুমতিতে তৈরি করা মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: মাহাবুবুল হক
পাবনার ঈশ্বরদীর মুলাডুলি স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিনা অনুমতিতে তৈরি করা মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: মাহাবুবুল হক

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী ট্রেন যাত্রাপথে অনুমতি না নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীর মুলাডুলি স্টেশনে সভামঞ্চ তৈরি করা হয়। আজ শনিবার দুপুরে ওই সভামঞ্চে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের।

মুলাডুলি স্টেশনে আন্তনগর নীলসাগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির সময় ২ মিনিট। রেলের সময়সূচি অনুযায়ী ১২টা ৭মিনিটে এসে ১২টা ৯মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা ট্রেনটির। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৫৩ মিনিট দেরিতে বেলা ১টার দিকে মুলাডুলি স্টেশনে আসে নীলসাগর ট্রেন। ছেড়ে যায় ১টা ২৮ মিনিটে। টাঙ্গাইল থেকে মুলাডুলি স্টেশনে পৌঁছাতে ট্রেনটির ১ ঘণ্টা ২৮ মিনিট বিলম্ব হয়েছে।

মুলাডুলি রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের পশ্চিমে আওয়ামী লীগের লোকজন একটি সভামঞ্চ তৈরি করেন। লিখিত অনুমতি ছাড়াই মঞ্চ তৈরি করে স্টেশনে পথসভা করা হয়।

স্লোগানে মুখরিত স্টেশন
নীলসাগর ট্রেনটি বেলা ১টায় মুলাডুলি স্টেশনে এসে পৌঁছালে দলের শত শত নেতা-কর্মী প্ল্যাটফর্মে এসে মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। ওবায়দুল কাদের ট্রেন থেকে নেমে প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্মিত সভামঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। দলীয় সাধারণ সম্পাদকের পথসভা উপলক্ষে সকাল থেকেই ঈশ্বরদী, পাবনা, নাটোর ও আশপাশের এলাকা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীরা ব্যানার, প্লাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে জড়ো হতে থাকেন। এই পথসভার কারণে ট্রেনযাত্রী ও মুলাডুলি স্টেশন সড়কের পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। মুলাডুলি রেলগেট থেকে স্টেশন ও স্টেশন সড়কের কিছু দূর পর্যন্ত পদচালিত ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়। এর ফলে বৃদ্ধ ও শিশুদের কষ্ট করে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। মুলাডুলি বাজারের আমির হোসেন নামের এক ভ্যানচালক বলেন, স্টেশন রাস্তায় দুপুর পর্যন্ত ভ্যান যেতে দেওয়া হয়নি।
দলীয় সাধারণ সম্পাদকের পথসভাকে কেন্দ্র করে পাবনা-৪ আসনে এবার মনোনয়নপ্রত্যাশী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস, আবদুল আলিম, রবিউল আলম (বুদু), রফিকুল ইসলাম লিটন, নজরুল ইসলাম (রবি), মিজানুর রহমানের (স্বপন) বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে যায় মুলাডুলি স্টেশন এলাকা।

জনগণ আ.লীগের সঙ্গে আছে
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের সভাপতিত্বে ওবায়দুল কাদের সভামঞ্চে উঠেই স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘শেখ হাসিনার সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’ তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচনের আগেই দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই আজ মানুষের হাতে হাতে মোবাইল, ইন্টারনেট, গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল সেবা সেন্টার, উন্নত রাস্তাঘাট। মানুষজন স্বস্তিতে চলাচল করতে পারছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়া নারীদের এত বড় সম্মান আর কেউ দেয়নি। আগে শুধু বাবার নাম লেখা হতো। এখন বাবার সঙ্গে মায়ের নামও লেখা হয়। তিনি আরও বলেন, এসব উন্নয়ন দেখে খালেদা জিয়া ও বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে ইনশা আল্লাহ আওয়ামী লীগ আবার জয়লাভ করবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ আর বিএনপির দুঃশাসন দেখতে চায় না।

ওবায়দুল কাদেরের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ। একই ট্রেনে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আসা ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ মুলাডুলিতে পথসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ঈশ্বরদীতে থেকে যান।