খরতাপেও সুলতানের জন্য ভালোবাসা

নৌকাবাইচের মধ্যে ছিল জারি গানের আয়োজন। ছবি: প্রথম আলো
নৌকাবাইচের মধ্যে ছিল জারি গানের আয়োজন। ছবি: প্রথম আলো

নড়াইলের চিত্রা নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজারো উৎসুক মানুষ। বেলা আড়াইটা বেজে গেলেও নৌকাবাইচের দেখা নেই। ভাদ্রের কাঠফাটা রোদে এমনিতেই ঘাম ঝরছিল। কিন্তু উৎসবে অংশ নেওয়া সুলতানভক্তদের উৎসাহের কোনো কমতি ছিল না। একপর্যায়ে পুরুষ ও নারী বাইচদের ছোট-বড় ১৫টি নৌকা দেখে উল্লাসে মেতে ওঠেন সবাই।

নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা, আর্ট ক্যাম্পে অংশ নেওয়া শিল্পীদের চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, নৌকাবাইচে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন সুলতানভক্তরা। ভারত থেকে আসা চিত্রশিল্পী পার্থ প্রতীম রায় ও সুমন পাল এখানকার মানুষদের সুলতানের প্রতি ভালোবাসা আর প্রাণের উচ্ছ্বাস দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘প্রচণ্ড খরতাপেও সুলতানের প্রতি ভালোসার কমতি নেই ভক্তদের। এমন প্রাণের বান্ধবের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি। এমন আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখিনি কোথাও।’ আরএফএলের সহযোগিতায় গত মঙ্গলবার নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে চার দিনের এ উৎসবের আয়োজন করে এস এম সুলতান শিশু চারু ও কারুকলা ফাউন্ডেশন। প্রাণ আপের সহযোগিতায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন ও সুলতান ফাউন্ডেশন ।

নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শেষে সুলতান মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার। জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন পিপিএম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান, নড়াইল পৌর মেয়র মো. জাহাঙ্গীর বিশ্বাস প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন সুলতান ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীরেণ শিকদার বলেন, শিল্পী সুলতান ছিলেন একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক। তাঁর তুলির আঁচড়ে সব সময় ফুটে উঠত পেশিবহুল সুস্থ সবল কৃষকের ছবি।
বীরেন শিকদার বলেন, বহির্বিশ্বে নিজের দেশকে পরিচিতি ঘটিয়েছেন। এমন দেশবান্ধব শিল্পীর শূন্যতা অপূরণীয়। তিনি মনে করেন এ প্রজন্মের শিল্পীরা তাঁর আদর্শ বুকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।