২০ ঈদ গেল, আন্দোলন কবে? ফখরুলকে কাদের

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ট্রেন সফরের যাত্রাবিরতিতে শনিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের বিরামপুরে পথসভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: এ এস এম আলমগীর হোসেন
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ট্রেন সফরের যাত্রাবিরতিতে শনিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের বিরামপুরে পথসভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: এ এস এম আলমগীর হোসেন

বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে ব্যর্থ বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুধু ঈদের পর আন্দোলনের হুমকি দেন। ১০ বছরে তো ২০টা ঈদ গেল, বিএনপি আন্দোলন করবে কখন?

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ট্রেন সফরের যাত্রাবিরতিতে আজ শনিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের বিরামপুরে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

বিরামপুর রেলস্টেশনে সেতুমন্ত্রী বলেন, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের সড়ক ফোর লেন হবে। চালু হবে বুলেট ট্রেন। শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আসবে দেশ। ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে বিদ্যুৎ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ যুগ ডিজিটাল যুগ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থল, সমুদ্রের পর মহাকাশ বিজয় হয়েছে। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার মূলশক্তি তরুণ-তরুণী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটা আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ওপর ভর করে ব্যর্থ বিএনপি। লন্ডনে বসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দলটি এখন নেমেছে ফেসবুকে গুজব ষড়যন্ত্রে। বিএনপির কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব শুধু ঈদের পর আন্দোলনের হুমকি দেন। ১০ বছরে তো ২০টা ঈদ গেল, আন্দোলন করবেন কখন? সামনে তো নির্বাচন।’

আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, সব মনোনয়নপ্রত্যাশীর এসিআর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। শেখ হাসিনার গুড বুকে যে ১ নম্বরে থাকবেন, তিনিই মনোনয়ন পাবেন।

বিরামপুরে হাজারো মানুষের উপস্থিতি দেখে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুধু নেতাদের আসার কারণে বিরামপুরের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। যদি শেখ হাসিনা আসেন তবে তো এখানে মহা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। এতে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগের ওপর জনগণের আস্থা কতটা বেড়েছে।’

বিরামপুরে নীলসাগর ৩ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে থাকে। শনিবার ৬টা ৪২ মিনিটে প্রবেশ করে ছেড়ে যায় ৭টা ১৩ মিনিটে। ওবায়দুল কাদের ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনের পূর্ব পাশে নির্মিত মঞ্চে উপজেলা আওয়ামী লীগের পথসভায় ১৮ মিনিট বক্তব্য দেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম সবুজের সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য দেন দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ শিবলী সাদিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী, বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম, হাকিমপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইমদাদুল হক, পৌর মেয়র জামিল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ, ঘোড়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাফে খন্দকার সাহানশাহ প্রমুখ।

ফুলবাড়ীতে কাদেরের বক্তব্য ৮ মিনিট
এরপর ফুলবাড়ী রেলস্টেশনে ৭টা ৩০ মিনিটে পৌঁছায় নীল সাগর। সেখানে রেলস্টেশনের ওপর নির্মিত মঞ্চে ৮ মিনিট বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কয়লাখনির লুটপাটের ঘটনায় ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।

এরপর নীলসাগর ট্রেনটি ৮টা ২ মিনিটে পার্বতীপুর রেলস্টেশনে পৌঁছায়। সেখানে রেলস্টেশনের পশ্চিম পাশে নির্মিত মঞ্চে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের। সেখানে ৮টা ১২ মিনিট থেকে ৮টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত বক্তব্য দেন। নীল সাগর ট্রেনটি পার্বতীপুর রেলস্টেশন থেকে ৮টা ৩৬ মিনিটে ছেড়ে যায়।

হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়েছে: কাদের
পার্বতীপুরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নারীদের একমাত্র শেখ হাসিনাই সম্মান দিয়েছেন। আশা করি নারীরা আগামী নির্বাচনে এর প্রতিদান দেবেন।’ দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘রাজনীতিতে মানুষের ভালোবাসা বড় সম্পদ। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। যাঁরা এমপিদের অবাঞ্ছিত করছেন তাঁদের কাছে যেমন জবাব চাওয়া হবে, তেমনি যেসব এমপি দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন, তাঁদের কাছেও জবাব চাওয়া হবে।’

ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী ট্রেন সফরসঙ্গী হিসেবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ আছেন।