রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই

প্রথম আলো আয়োজিত ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। পাশে ব্লাস্টের প্রধান আইন উপদেষ্টা মো. নিজামুল হক। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে।  ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো আয়োজিত ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। পাশে ব্লাস্টের প্রধান আইন উপদেষ্টা মো. নিজামুল হক। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

রোহিঙ্গাদের শুধু মানবিক সহায়তা নয়, মিয়ানমার যাতে তাদের সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়, সে প্রক্রিয়াটিকেও দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কেননা, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প সমাধান নেই।

গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলো আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যার এক বছর’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আলোচকেরা এসব কথা বলেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সিএ ভবনে প্রথম আলো মিলনায়তনে এ গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের সহায়তায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় রোহিঙ্গা শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। আলোচনায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ডিজাস্টার রেসপন্স অপারেশনের পরিচালক নাজমুল আজম খান বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া যত দীর্ঘ হবে, সমস্যা তত বাড়তে থাকবে। উখিয়ার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যোগ হয়েছে। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক (রিসার্চ অ্যান্ড সোশ্যাল মিডিয়া) বরকত উল্লাহ মারুফ বলেন, রোহিঙ্গাদের দেখভালে শুধু দাতা সংস্থার সহায়তার দিকে তাকিয়ে না থেকে স্থানীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে, যাতে এরাই রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে পারে।

শিশুদের দিকে নজর বাড়াতে হবে

সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমার থেকে আসা এতিম শিশুসহ বর্তমানে রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নেওয়া ৬০ হাজার শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এবং রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের ফোকাল পয়েন্ট সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলে শিশুদের শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নতুন করে চিন্তা করতে হবে। প্রয়োজনে দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। চুক্তির আওতায় প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে এই শিশুদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করতে হবে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক (প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি) রিফাত বিন সাত্তার বলেন, নতুন আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশই শিশু। গণমাধ্যমকর্মীসহ যাঁরা রোহিঙ্গা শিবিরে যাচ্ছেন, তাঁদের এই শিশুদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, তা নিয়ে কোনো প্রশিক্ষণ নেই। সবাই গিয়ে এই শিশুদের কাছে মিয়ানমারের ঘটনা জানতে চাইছেন, এতে শিশুরা প্রতিনিয়ত সেই অভিজ্ঞতা মনে করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রথম আলোর উপদেষ্টা গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, শিবিরে এতিম শিশুদের আত্মীয় বা অন্য কোনো পরিবারের সঙ্গে রাখা হচ্ছে। পরিবারগুলো মেয়ে বাচ্চা নিতে বেশি আগ্রহী। কেন এ আগ্রহ, তা তলিয়ে দেখতে হবে।