বিএনপির অভিযোগ ১০৭ জন গ্রেপ্তার, পুলিশের অস্বীকার

রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপির আজ বুধবারের প্রতীকী অনশন কর্মসূচি থেকে ১০৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে দলটি। তবে পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার নয়, কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও তাঁর মুক্তির দাবিতে আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে এই প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়।

একই দাবিতে গত সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সারা দেশের জেলা সদর ও মহানগরে মানববন্ধন করে বিএনপি। ওই কর্মসূচিতে ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অনেক জায়গায় বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। গত দিনের কর্মসূচিতে পুলিশের অভিযানের কারণে আজকের প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কম ছিল।

আজ বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আজকের কর্মসূচি শেষে নেতা-কর্মীদের ফেরার সময় ঢাকায় ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া গতকাল মঙ্গলবার থেকে আজ পর্যন্ত সারা দেশে ৪৪ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, আজ সকাল থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদের বনানীর বাসভবন পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সারা দেশে সরকারি ‘সন্ত্রাসের’ অংশ হিসেবে পুলিশ হাফিজ উদ্দিনের বাসা ঘিরে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকার এখন শেষ বেলায়। খাদের কিনারে পতনের শঙ্কায়। সে জন্য তারা শেষ ভরসা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। কিন্তু এই ভরসাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। ক্ষমতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে না। বিএনপির নেতা-কর্মীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর অন্যায় আচরণ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলার কারণে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতে পুলিশ আটক অভিযান চালায়। এ কারণে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আজ আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিএনপির দাবি ঠিক নয়। কতজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেটি যাচাই-বাছাই শেষে আরও পরে জানানো যাবে।

আজকের কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার এড়াতে কর্মসূচি শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে থেকে অনশনস্থল ত্যাগ করা শুরু করেন। এ কারণে অনশনের সভাপতি ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন উপস্থিতি একেবারে কমে যায়। বিএনপির অনশন কর্মসূচিতে পুলিশ কোনো অভিযান না চলালেও কর্মসূচি ঘিরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। সাদাপোশাকের পুলিশ মৎস্য ভবন মোড় ও কাকরাইল এলাকায় গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে। এ সময় পুলিশ বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ধরে নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বিএনপির কর্মসূচি থেকে ফেরার সময় সাদাপোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ দলটির নেতা-কর্মীদের আটক করে। পুলিশ সদস্যরা আগে থেকে মৎস্য ভবন ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নেওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আটকের বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি।

ধরপাকড়ের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলছেন, আজ বিএনপির কর্মসূচি থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে।