নতুনরূপে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ছবি: বাসস
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ছবি: বাসস

ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমাহারে সাজানো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল বুধবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। হোটেলটি সংস্কারের পর ৪১টি কক্ষ কমেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষে শিগগিরই হোটেলটি বাণিজ্যিকভাবে খুলে দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৬৬ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল এ দেশের প্রথম পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের। স্থপতি উইলিয়াম বি ট্যাবলারের চমৎকার নকশার এ হোটেলটি আজও চমৎকার স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন। এটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামেই চলে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। এরপর স্টারউড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় ১৯৮৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকা শেরাটন হোটেল নামে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলে। শেরাটনের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ‘রূপসী বাংলা হোটেল’ নামে এটি পরিচালিত হয়। ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেলটির মালিক কোম্পানি বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেড ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ (এশিয়া প্যাসিফিক) প্রাইভেট লিমিটেডের (আইএইজি) সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধের পর ২০১৫ সালের মার্চে সংস্কারকাজ শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রূপসী বাংলা হোটেলে কক্ষ ছিল ছোট-বড় মিলিয়ে ২৭২টি। সংস্কারের পর কক্ষের সংখ্যা কমে ২৩১ টিতে দাঁড়িয়েছে। আয়তনের দিক থেকে কক্ষের আকার দাঁড়িয়েছে ২৬ থেকে ৪০ বর্গমিটার। বিশ্বমানের অতিথিসেবা নিশ্চিত করতে পরিবর্তন করা হয়েছে সুইমিং পুল ও ডাইনিং হলের স্থান। এর আগে হোটেলটির বলরুম ছিল একদিকে, উইন্টার গার্ডেন নামে সবচেয়ে বড় হলরুমের অবস্থান ছিল আরেক দিকে। এখন দুটি এক করে দেওয়া হয়েছে। হোটেলটির মূল ফটকও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেতরের সুইমিং পুলটিও স্থানান্তর করে সাজানো হয়েছে নতুন করে। গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় নিয়ে বাড়ানো হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। সংস্কারকাজে প্রায় ৬২০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে জীবন বাজি রেখে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যার ছবি ধারণ করেছিলেন হোটেলে অবস্থানরত বিবিসির বিখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি ও সাইমন ড্রিং, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) পাকিস্তান ব্যুরোর প্রধান আর্নল্ড জেইটলিন, ক্লেয়ার হলিংওর্থ, ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রতিবেদক ডেভিড গ্রিনওয়ে। এসব ছবির মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পেরেছিল বাংলাদেশ কী নৃশংসতার শিকার হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক, বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেডের (বিএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বের হোসেন প্রমুখ।