গ্রেপ্তারের ভয়ে মাঠছাড়া বিএনপি নেতারা

আহমেদ আযম খান ও  শেখ মোহাম্মদ হাবীব
আহমেদ আযম খান ও শেখ মোহাম্মদ হাবীব

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে আওয়ামী লীগের আটজন সম্ভাব্য প্রার্থী প্রতিদিন গণসংযোগ করছেন। তবে বিএনপি নেতারা গ্রেপ্তারের ভয়ে কেউ মাঠে নামতে পারছেন না। ফলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করা বা কুশল বিনিময় করতে পারছেন না।

সখীপুর উপজেলা পরিষদের বিএনপি মনোনীত ভাইস চেয়ারম্যান মুহম্মদ ছবুর রেজা বলেন, ৬ সেপ্টেম্বর রাতে হঠাৎ সখীপুর উপজেলার শীর্ষস্থানীয় বিএনপির নেতাদের বাসায় পুলিশি অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। ৭ সেপ্টেম্বর নাশকতার প্রস্তুতির মিথ্যা অভিযোগ এনে ১৬ জন বিএনপি নেতার নাম ও ৫০ থেকে ৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা ঠুকে দিয়েছে। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর রাতেও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সখীপুর-বাসাইলের পাঁচ শতাধিক নেতা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

টাঙ্গাইল-৮ আসনের টানা তিনবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলার একজন আইনজীবীও। আযম খান বলেন, ‘পাঁচ বছর পুলিশের ভয়ে ও অনুমতি না পাওয়ায় সখীপুরে কোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারিনি। চার বছর আমাদের কোনো কার্যালয় ছিল না। কোনো সভা করতে পারিনি। এরপরও কয়েক দিন আগে নাশকতার প্রস্তুতি বলে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এ অবস্থায় সখীপুর-বাসাইলে গিয়ে গণসংযোগ করতে পারছি না।’

সখীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাজাহান শাজু বলেন, ‘আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আমি অনেক দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। প্রতি রাতেই আমার বাসায় পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে। আমার স্ত্রী, সন্তানদের হুমকি দিচ্ছে।’

৭ সেপ্টেম্বর সখীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মোহাম্মদ হাবীবকেও আটক করে পুলিশ। যদিও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মোহাম্মদ হাবীব বলেন, ‘মাঠ জরিপে বিএনপির মনোনয়ন হলে আমিই এ আসনে মনোনয়ন পাব।’ পুলিশের হয়রানির বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক শেখ শফি শাওন সংবাদ সম্মেলন করে মনোনয়ন প্রত্যাশার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশের গ্রেপ্তারের ভয়ে এলাকার সব নেতা পালিয়ে আছেন। এ সময় এলাকায় গিয়ে কাকে নিয়ে গণসংযোগ করব?’

জেলা বিএনপির সহসভাপতি জিয়াউল হক শাহীনও এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমরাও গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’

তবে সখীপুর থানার ওসি এস এম তুহিন আলী বলেন, পুলিশ সবকিছু বুঝে ও তদন্ত করেই আসামি করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ পেয়েই মামলা করা হয়েছে। কাউকে হয়রানি করতে নয়। এ ছাড়া বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা আসামি নন। তাঁরা যেকোনো সময় গণসংযোগ করতে পারবেন।