চরের পাখি চরটিটি

চরটিটি। রাজশাহীর পদ্মার চরে।  ছবি: আ ন ম আমিনুর রহমান
চরটিটি। রাজশাহীর পদ্মার চরে। ছবি: আ ন ম আমিনুর রহমান

গ্রামবাংলায় প্রচলিত আছে, আকাশ ভেঙে পড়ার ভয়ে এরা পা ওপরের দিকে দিয়ে শোয়। আসলে চরটিটির ব্যাপারটা হলো, ডিম বা ছানা যাতে আকাশ-শত্রু চিল বা বাজের নজরে না পড়ে, সে জন্য এরা কাত-চিত হয়ে থাকে। ওদের বুক-পেটের রং বালুচরের সঙ্গে ক্যামোফ্লেজ করা।

বাসা বলতে যা বোঝায়, টিটি-হটটিটি তা বানায় না। চরের বালুতে একটু খোঁদল বানিয়ে সেখানেই জলপাই-হলুদরঙা ডিম পাড়ে। সংখ্যায় চারটি। মেয়ে পাখি একাই তা দেয় ডিমে। ছানা হয় ২২-২৪ দিনে। ডিমের মতো ছানাদের রংও বালুর সঙ্গে ক্যামোফ্লেজ করা। মানুষ, বেজি, গুইসাপ, খ্যাঁকশিয়াল ডিম বা ছানাদের কাছে এলে মা-বাবা দুজনে নানা অভিনয় করে তাদের বিভ্রান্ত করে। প্রয়োজনে দু-পাখা উল্টে দিয়ে, ঠোঁট ফাঁক করে ফোঁস ফোঁস শব্দে তেড়ে যায়! সে বড় আশ্চর্য-সুন্দর শৈল্পিক দৃশ্য!

চরটিটির (River Lapwing) কপাল-মাথা, গলা-লেজ, ঠোঁট-পা ও পাখার প্রান্ত কালো। ঘাড়-পিঠ বালু-বাদামি। বুক-পেট সাদা। ধাতব-জোরালো গলায় ডাকে ‘ডিড ডিড ডিড ডিড’ ও ‘টিট টিট টিট টিট’ শব্দে। বিশ্রামের সময় এক পায়ে দাঁড়িয়ে ঠোঁট গুঁজে রাখে পিঠে।