বাউফলে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৩০

পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ফুটবল খেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পুলিশ, চার খেলোয়াড়সহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার উপজেলা সদরের পাবলিক মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৮-র (অনূর্ধ্ব-১৭) নকআউট পর্বের খেলায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনার সময় মাঠের চারপাশে দুই হাজারের মতো দর্শক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, আশপাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিপেটায় ছোটাছুটি করতে গিয়ে অনেকে আহত হন।

বুধবারের নকআউট পর্বের এই খেলায় অংশ নিয়েছিল চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন একাদশ ও নাজিরপুর ইউনিয়ন একাদশ। আয়োজক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই দুই পক্ষের মধ্যে খেলা শুরু হয়। খেলার অল্প সময়ের মধ্যে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। এরপর নাজিরপুর একাদশের পক্ষে একটি গোল হয়। কিন্তু ওই গোল হওয়ার আগেই আম্পায়ার অফসাইডের সংকেত দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আম্পায়ারের অফসাইডের এই সংকেত দেওয়ার পর দুই পক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা প্রথমে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় প্রায় ২০ মিনিট খেলা বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। পরে আবার খেলা শুরু হয়।

খেলা আয়োজক পক্ষের সূত্রে জানা গেছে, এই খেলা শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে নাজিরপুর একাদশের এক খেলোয়াড় চন্দ্রদ্বীপ একাদশের এক খেলোয়াড়কে থাপ্পড় মারেন। আর এখান থেকেই দুই পক্ষের খেলোয়াড় ও দর্শকেরা আবার মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নিয়ে প্রায় আধঘণ্টা চলে।

আহতদের মধ্যে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মাসুদ ও পুলিশের সদস্য মো. ছিদ্দিক, খেলোয়াড় মো. হাসান, সাগর, নয়ন ও শিশিরের নাম জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে এএসআই মাসুদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

৬ সেপ্টেম্বর এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী খেলা একই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই টুর্নামেন্টে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা থেকে ১৬টি দল অংশ নেয়।

এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি গ্রীষ্মকালীন প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল খেলায় কেন্দ্র করে বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। আহত লোকজনের মধ্যে মো. বিপ্লব নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিজুস চন্দ্র দে এবং বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম পৃথকভাবে বুধবারের সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।