ছয় কোটি টাকার সোনাসহ গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী খাজা শাহাদাত রিমান্ডে

সোনা চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার খাজা শাহাদাত উল্লাহকে রোববার ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। ছবি: আসাদুজ্জামান
সোনা চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার খাজা শাহাদাত উল্লাহকে রোববার ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। ছবি: আসাদুজ্জামান

বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লাগেজ খুলতে বলতেই বোর্ডিং কার্ডটি খেয়ে ফেলেন তিনি। অনেক চেষ্টা করেও তা উদ্ধার করা যায়নি। পরে তাঁর লাগেজ তল্লাশি করে সাড়ে ১২ কেজি সোনা পাওয়া যায়। ওই ব্যক্তির নাম খাজা শাহাদাত উল্লাহ। তাঁর নামে চোরাচালানের মামলা করা হয়েছে। 

এই খাজা শাহাদাতের বাবার নাম খাজা এনায়েত উল্লাহ। তিনি রাজধানীর বনানীতে বসবাস করেন। পুলিশ বলছে, এ আসামি নিজেকে ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন। পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, খাজা শাহাদাত সোনা চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। এ চক্রের মূল হোতার নাম-পরিচয় উদ্‌ঘাটনের জন্য তিন দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশকে অনুমতি দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।

শনিবার রাতে খাজা শাহাদাত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা সমমূল্যের ১২ কেজি ৬০০ গ্রাম সোনা উদ্ধারের ঘটনায় কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আতাউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলায় বলা হয়, গতকাল রাত ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে উড়োজাহাজে করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন খাজা শাহাদাত। পরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) একটি দল তাঁকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় তাঁর সঙ্গে তিনটি লাগেজ ছিল। লাগেজের ভেতরে সোনা পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্র বলছে, খাজা শাহাদাতের কাছ থেকে জব্দ করা সোনার মধ্যে ১ হাজার ৭২২ পিস চেইন, ২৩৮ জোড়া কানের দুল, ১৫ জোড়া হাতের বালা ও ১৩২ পিস আংটি।

আজ রোববার খাজা শাহাদাত উল্লাহকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান। রিমান্ড আবেদনে তিনি আদালতকে জানান, আসামি খাজা শাহাদাত সোনা চোরাচালান চক্রের একজন সদস্য। এ চক্রের মূল হোতাকে খুঁজে বের করার জন্য আসামি খাজা শাহাদাত উল্লাহকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। খাজা শাহাদাতের কাছে কে সোনা দিয়েছিলেন, কার কাছে তিনি এ সোনা পৌঁছে দেবেন, তা জানা দরকার।

পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খাজা শাহাহাদাতকে তিনি প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। শাহাদাত নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করেছেন। সিমেন্টের কাঁচামালসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি তিনি আমদানি-রপ্তানি করে থাকেন।

তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খাজা শাহাদাত জিজ্ঞাসাবাদের সময় দাবি করেছেন, তিনি সিঙ্গাপুরে যান তাঁর ব্যবসায়িক কাজে। সেখানে তাঁর মিটিং ছিল। সিঙ্গাপুরে কার কাছ থেকে সোনা নিয়ে আসেন, তা তিনি স্বীকার করেননি। তবে সোনাগুলো তাঁর নিজের বলে দাবি করেছেন।

লাগেজ দেখানোর সময় কেন খাজা শাহাদাত বিমানের বোর্ডিং কার্ডটি গিলে খেয়ে ফেলেন, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে পারেননি পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ।

তবে মামলার বাদী ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আতাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খাজা শাহাদাতকে যখন লাগেজ খুলতে বলা হয়, তখন ব্যাগ খোলার ভান করে হঠাৎ বিমান বোর্ডিং কার্ডটি তিনি খেয়ে ফেলেন। বহু চেষ্টা করেও তাঁর মুখ থেকে বোর্ডিং কার্ডটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।